নকশা বহির্ভূত স্থাপনা, অনৈতিক সুবিধায় নীরব রাজউক-৮

92

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক ব্যবহার ও নকশা বহির্ভূত স্থাপনা অপসারণে উচ্ছেদ অভিযান নাই রাজউকের। নীরব ভুমিকায় ঘুমের মধ্যে আছে কর্মকর্তারা।নারায়নগঞ্জ শহরে ছড়াছড়ি নকশা বহির্ভুত বিল্ডিং এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না রাজউক-৮ কিন্তু  অনৈতিক সুবিধায় নীরব ভুমিকায় রয়েছে রাজউক-৮ জোনের কর্মকর্তারা। নারায়ণগঞ্জ রাজউকের পরিচালক বরাবর প্রায় ১ বছর আগে অভিযোগের পত্র দেওয়া হলেও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে নীরবতা পালন করছে কর্মকর্তারা। এই অভিযোগ পত্রের অনুলিপি কার্যার্থে দেওয়া হয়েছে রাজউকের চেয়ারম্যানকে, তবুও টনক নড়ছে না রাজউক-৮ জোনের অফিসারদের। সাবেক পরিচালক ইয়াহিয়া ব্যবস্থা নিবে বলেও অদৃশ্যের ছোবলে নেয়নি কোন ব্যবস্থা। নতুন পরিচালককে বাতি দিয়ে খোজে পাওয়া যাচ্ছে না, কয়েকবার নারায়নগঞ্জ সাইনবোর্ড অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি কোন বড় কর্মকর্তা। কথা হয় ইন্সপেক্টরদের সাথে, পাওয়া যায় অনেক অভাবনীয় তথ্যাদি।

রাজউল ৮ নারায়নগঞ্জের অফিস যে বিল্ডিং অবস্থিত তাতেই রয়েছে দুর্নীতি, করা হয়েছে নামে মাত্র জরিমানা। ভবনের নাম টিপিএল, মালিক পক্ষের সারোয়ার অনোইতিক সুবিধা দিয়ে ধামা চাপা দেয় অবৈধ কাজের ঝামেলা।নীচের আন্ডার গ্রান্ডে পার্কিং এর বদলে ভাড়া দিয়েছে দোকান ও গোদাউন।পার্কিং এ প্রবেশ পথ ১টা বন্ধ করে ব্যাংকের এটিএম বুথ ভাড়া দিয়েছে রাজউকের অফিসের নাকের ডগায়।  

অট্টালিকার শহরে রূপ নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ। ইমারত আইনের তোয়াক্কা না করে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠা এসব অট্টালিকা যেন একেটি মরণ ফাঁদ। যেকোনো সময়ে একেকটি ভবন পরিণত হতে পারে জলন্ত চিতায়। নারায়ণগঞ্জে রয়েছে অসংখ্য নকশা বহির্ভুত বহুতল ভবন। আবাসিক নকশায় গড়ে তোলা এই ভবনর মালিকরা অনিয়মের মাধ্যমে তা বাণিজ্যিক ভবনে পরিণত করেছে। পুরনো ভবনের ফ্লোর ভাড়া নিয়ে সাজ সজ্জার প্রলেপ লাগিয়ে বসানো হয়েছে অভিজাত হরেক রকম রেস্টুরেন্ট। এর মধ্যে শহরের চাষাড়া শহীদ মিনার ঘেষা ভাষা সৈনিক সড়কের পাশে অবস্থিত মনির টাওয়ার এবং পাশর্বর্তী ৮ তলা ভবনে সুলতান ডাইনসহ পুরোটাই বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ঠাসা। এসব রেস্টুরেন্টগুলোর চুলোয় আগুন জালাতে ব্যবহৃত হচ্ছে এলপিজি তথা গ্যাসের সিলিন্ডার। যেকোনো দূর্ঘটনায় এই গ্যাস সিলিন্ডার একেকটি বোমায় পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। এসব ভবন থেকে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে রাজউকের কর্মকর্তারা, যদি না নেয় তাহলে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন ??

সুত্রমতে, চাষাড়ার ৬৯ নং প্লটে সুফিয়া কমপ্লেক্স ৯ তলার নকশায় তৈরি হয়েছে ১০ তলা। হক লিভিং লিমিটেড ৯ তলার নকশা নিয়ে কাজ শুরু করে ১ তলা পর্যন্ত তৈরি করে, পরবর্তিতে মালিক পরিবর্তন হয়ে আসে কমিট্মেন্ট ডেভ্লপার আবদুল আজিজ। শুরু হয় দুর্নীতি, ৯ তলার পরিবর্তে ১০ তলা, তার উপর মসজিদ, গ্রাউন্ড ফ্লোরে পার্কিং না করে বিক্রি করছে দোকান অফিস, চারদিকে রাজউকের কোড না মেনে তৈরি হচ্ছে ভবন। সময়মত ফ্লাট বুজে না পেয়ে হয়রানীর শিকার গ্রাহকরা। চাষাড়ার রুপায়ন টাওয়ারের সামনের এক সাইডে নকশা বহির্ভুত দোকান অপসারন করছে না রাজউক-৮ জোনের কর্মকর্তারা। জামতলা হীরা কমিউনিটি গলিতে আবাসিক এলাকার আবাসিক অনেক ভবনে গড়ে উঠেছে বানিজ্যিক বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিন্তু কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না রাজউক-৮ জোনের পরিচালক। আবাসিক ভবন বাণিজ্যিকে রূপ দিলেও এই বিষয়ে মাথা ব্যাথা নেই রাজউক কর্মকর্তাদের।

চাষাড়া রুপায়নের পশ্চিম পাশে এক আওয়ামী-লীগ নেতার নিজের বিল্ডিং হচ্ছে নকশা বহির্ভূত এবং নেতার বাবার বিল্ডিং এর সামনে করছে অবৈধ স্থাপনা, রাজউক নিচ্ছে না কোন ব্যবস্থা। রাজউক-৮ অফিসে গিয়ে অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নাই, পাওয়া যাচ্ছে কোন সঠিক তথ্য।

এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ রাজউক ৮ জোনের পরিচালককে কল করলে তিনি কল ধরেন নি, দুইজন অথারাইজড অফিসারকে কল করলেও তাহারা কল ধরেন নাই, অফিসে গিয়ে তাদের পাওয়া যায় না। শুধু হেড অফিসে আছে তারা জবাব দেয় কর্মচারীরা।

জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ নকশা বহির্ভুত ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য রাজুক চেয়ারম্যানকে আহবান জানিয়েছেন।