আসমা আক্তার সিমা: পিলখানায় কর্ণেল গুলজার উদ্দিন আহমদকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে জঙ্গি নেতা শায়েখ আব্দুর রহমানের ফাঁসির বদলা নেয়া হয়। রাজশাহীর কুখ্যাত জঙ্গি জেএমবি প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইর সহযোগী ও জেএমবির শীর্ষ নেতা ছিলেন আওয়ামী লীগের বিনা ভোটের এমপি মির্জা আজমের ভগ্নিপতি শায়েখ আব্দুর রহমান।
কর্ণেল গুলজার আহমদ ২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেট শহরের টিলাগড় এলাকার পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় এ ব্লকের ২ নং রোডের ২২ নম্বরে স্বপ্নের ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ থেকে শায়েখ আব্দুর রহমানকে আটক করেন। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী র্যাব বাংলা ভাইকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আদালত তাদের ফাঁসির আদেশ দিলে সরকার সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই ও শায়েখ আব্দুর রহমানসহ সহযোগীদের ফাঁসি কার্যকর করে।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কর্ণেল গুলজারকে বিডিআরে প্রষেণে বদলি করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারির বিডিআর সপ্তাহের সেই অনুষ্ঠানের দরবার হলে তিনি উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের বাল্যবন্ধু ডিএডি তৌহিদ যখন ভারতীয় ঘাতক বাহিনীকে নিয়ে সেনা কর্মকর্তাদের উপর আক্রমণ চালায় তখন কর্ণেল গুলজাররা সেটা প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ঘাতকরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে একে একে চৌকস অফিসারদের হত্যা করে। এ সময় কর্ণেল গুলজার এক পর্যায়ে লুকিয়ে প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করেন।
প্রথম দিনের হত্যাকান্ডের নারকীয় তাণ্ডব থেকে লুকিয়ে থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন কর্ণেল গুলজার। ২৬ তারিখ দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে তিনি জীবিত আছেন জানিয়ে উদ্ধারের জন্য সাহায্য চান। কিন্তু তাকে উদ্ধার না করে ঘাতকদের জানিয়ে দেয়া হয় গুলজার জীবিত এবং তার অবস্থান। বিকালে জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম পিলখানায় প্রবেশ করে গুলজারকে হত্যার দৃশ্য উপভোগ করেন এবং তাঁকে কেরোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে তাঁর লাশ বিকৃত করেন।
এভাবেই ভগ্নিপতি শায়েখ আব্দুর রহমানের ফাঁসির বদলা নেন আওয়ামীলীগের তৎকালিন হুইপ ও বর্তমান বিনা ভোটের এমপি মির্জা আজম।