খন্দকার সফি উদ্দিন: নরসিংদী পাসপোর্ট অফিসে দালালের হাত ধরে বাংলাদেশী পাসপোর্ট করতে এসে ৪ রোহিঙ্গা নারী গ্রেফতার হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৩০মে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এর ভিতর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ৪ রোহিঙ্গা নারীরা হচ্ছে ১। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ আসা হামিদুল্লার কন্যা নুর বিবি(১৪), ২। সলিম উল্লাহর কন্যা আমেনা বেগম(২৩), ৩। মোঃ মামু সুলতানের কন্যা রাশিদা(১৬), ৪। মোহাম্মদের কন্যা আনোয়ারা আক্তার(১৭)। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কক্সবাজার কুতুপালং ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে নরসিংদী পাসপোর্ট কার্যালয়ে দালালদের মাধ্যমে পাসপোর্ট করার উদ্দেশ্যে আসছিল। তারা নরসিংদী পাসপোর্ট অফিসে এসে কাগজপত্র সম্পন্ন হওয়ার আগ মূহুর্তে তাদের সন্দেহ হলে নরসিংদী সদর থানার পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থালে পৌছে নরসিংদী পাসপোর্ট অফিস থেকে তাদের গ্রেফতার করে। নরসিংদী ঠিকানায় পাসপোর্ট প্রস্তুত কালে ৪ রোহিঙ্গা নারী তাদের মধ্যে রাশিদা আক্তারে শিবপুর জয়নগর এলাকার ঠিকানায় ফাইল পুরোপুরি ভাবে কাজ সম্পন্ন করে ফেলে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা। বাকী তিন পাসপোর্টের প্রস্তুতি কাজ চলছিল। সংবাদ পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশ তাৎক্ষণিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ধারনা করা হচ্ছে নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা নারীরা নরসিংদী ঠিকানায় অবৈধ পাসপোর্ট করছিল। পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গা নারী সাংবাদিকদের জানায়, বাংলাদেশে কিছু দালাল আছে তাদেরকে ১ হাজার টাকা ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রাম বাস ষ্ট্যান্ডে এনে বাসে তুলে দেওয়া হয়। সেখানে বাসের ড্রাইবারকে আরো ১হাজার টাকা দিয়ে দালালদের মাধ্যমে নরসিংদী নিয়ে আসে। ভালভাবে জীবন যাপন করতেই সেখান থেকে এখানে আসা। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন টাকা হলেই দালাল দিয়েই রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নরসিংদীতে তৈরী হয়। নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহকারী স্বজন হাওলাদার ও আরিফুল হক সুমনের সহযোগিতায় এসব কর্মকান্ড চলছে বলে জানায়। অপরদিকে নেপথ্যে থেকে এসবের সহযোগিতা করেছেন পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক। মূলত টাকার বিনিময়ে এসকল অসাধু কর্মকর্তা ও দালাল চক্র অবৈধ পাসপোর্ট এর কাজ করে থাকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক জেবুন্নেছা সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক তাপস কুমার রায়। সাংবাদিকদের তিনি জানান জেলার স্পেশাল ব্যাঞ্চ(ডিএসবি) নরসিংদী মডেল থানাকে অবগত করলে পাসপোর্স অফিসে গিয়ে ৪জন রোহিঙ্গা নারীকে গ্রেফতার করা হয়।পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতদের নরসিংদী আদালতের নির্দেশে তাদেরকে একইদিন রাতেই কক্সবাজার কুতুপালং ক্যাম্পে প্রেরণ করা হয়।