গৃহবন্দী প্রতিবন্ধী কিশোর ও তার মায়ের উপর হামলাকারীদের সালিস আবারো পিছিয়েছে

572

মোঃ নুর নবী (সোনারগাঁও ) নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সোনারগাঁও উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের নির্যাতিত সে প্রতিবন্ধী কিশোর ও তার মায়ের উপর হামলাকারীদের সালিস বৈঠক আবারো পিছিয়েছে।নির্যাতিত প্রতিবন্ধী কিশোর সুমন ও তার মা সাফিয়াকে নির্যাতন শেষে গৃহবন্দী করে রাখা গ্রাম‍্য মাতব্বররা পূর্ব নির্ধারিত সালিস বৈঠকে উপস্থিত হয়নি ।

এব্যাপারে গতকাল রবিবার সকাল দশটায়   সোনারগাঁও থানায় পুলিশর এ এস আই ইমাম আহাদ দ্বিতীয় বারের মতো  মিমাংসার লক্ষে সালিশ বৈঠক ডাকেন। গতকালের পূবনিরর্ধারিত দিনে নির্যাতন কারী মাতাব্বরগন না থাকায় আপোষ মিমাংসা বৈঠক করা যায়নি। নির্যাতন কারী গ্রাম্য মাতাব্বরা শালিস বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে উল্টো অভিযোগকারী সাফিয়াকে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে।

উলেখ্য গত ২ জুন শনিবার গভীর রাতে উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের বাবুর কান্দি গ্রামে সুমন (১৭) নামের এক প্রতিবন্ধি ও তার মাকে পিটিয়ে আহত করে গ্রাম্য মাতব্বরা।

এই ঘটনায় বাবুর কান্দি গ্রামের মাতব্বর তোফাজ্জল , কামাল ,মতিন প্রতিবেশী মনোয়ারা বেগমের নামে সোনারগাঁও থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন  প্রতিবন্ধি সুমনের মা  সাফিয়া বেগম  ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , মৃত্যু জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে জালাল উদ্দিন রুমীর স্ত্রী সাফিয়া বেগম তার একমাত্র ছেলে প্রতিবন্ধি সুমনকে নিজ বাড়ী বাবুর কান্দি গ্রামে বসবাস করে আসছেন।

গত কিছুদিন আগে সাফিয়া বেগমের বাঁধা উপেক্ষা করে উক্ত গ্রামের মাতব্বর তোফাজ্জল ও তার সহযোগী কামাল ,আলী হোসেন, মতিন  তার  বসতবাড়িতে জোর পূর্বক একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি বাসায় । পরে সাফিয়া বেগম খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডিজিএম এর বরাবর আবেদনের প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নিয়ে যায়।

এরই জের ধরে বিবাদী গণ ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে গত ২ জুন শনিবার গভীর রাতে সাফিয়া বেগমের বাাড়ীর মূল গেট ও দরজার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে ।

দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে স্বদলবলে সাফিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর, আসবাবপত্র ভাংচুর করে আলমারিতে থাকা ছয় লক্ষ্য টাকা ও ঘটনার পূর্বে মাতব্বর তোফাজ্জল ও কামাল  সট‍্যামে সাক্ষর করে সাফিয়ার থেকে তিন লক্ষ্য টাকা হাওলাদা নেয় ।

হামলার করে আলমারির তালা ভেঙে সে সাক্ষর করা সট‍্যামো নিয়ে যায়।  তার প্রতিবন্ধি ছেলে সুমনকে পিটিয়ে আহত করে।  পরে আহত সাফিয়া ও তার ছেলে সুমনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এলাকাবাসি।

সাফিয়া বেগম হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলে হামলাকারী গ্রামের মাতব্বররা নির্যাতিতা সাফিয়ার মিথ্যা চরিত্রের কুৎসা ছড়াচ্ছে এবং তোফাজ্জল ও কামাল গ্রামের মাতব্বর হয়ে সাফিয়াকে চরিত্রহীন আখ‍্যা দিয়ে গত ৭দিন যাবত সমাজচ্যুত করার চেস্টায় গৃহবন্দি করে রেখেছে।

ফলে ভুক্তভোগী সাফিয়া ও তার প্রতিবন্ধী ছেলে সুমন অনায়াসে রাস্তায় চলাচল এবং বাজার-ঘাট করতে না পারায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।

হামলাকারীরা গ্রামের মাতব্বর ও প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

এদিকে গতকাল রবিবার সকালে নির্যাতিতা দৈনিক ভোরের দর্পন পত্রিকার প্রতিনিধি ও প্রতিবেদকের কাছে ফোন করে জানান ।

বৃহস্পতিবার রাতে সাফিয়ার বসতবাড়ীতে এসে হামলাকারী মাতব্বর তোফাজ্জল ও কামাল সাংবাদিকদের কাছে মুখ না খোলার হুমকি দিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যদি সাংবাদিকদের কাছে কোনো রকম মুখ খোলা হয় তাহলে সাফিয়াকে এসিড দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়াসহ প্রতিবন্ধী ছেলে ও তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে যায় ।

এ ব্যাপারে স্থানীয় হারুন মেম্বার জানান, মাতাব্বরা বিচারটি নিয়ে নানা তালবাহানা করছে তাদের চাপ দেয়া হয়েছে আগামী ১২ই জুন মঙ্গলবার আবারও বিচার শালীসের সময় দেয়া হয়েছে।