হিটলিষ্টের মাদক ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে বন্দরে কৌশলে বিক্রি হচ্ছে মাদক

448

বন্দর প্রতিনিধিঃ বন্দরে পুলিশের তালিকায় হিটলিষ্টে দুই ডর্জনের উপরে মাদক ব্যবসায়ীরা এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে। এসব চিহিৃত মাদক চোরাকারবারীরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের স্পটে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে দেশব্যাপী মাদকের বিরুদ্ধে আইন শৃংক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান অব্যহত থাকায় কৌশলে মাদক সেবীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন মরন নেশা মাদক দ্রব্য।  সরকার মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনকে নির্দেশ থাকা সত্যেও বন্দরে  চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা বন্ধ তো করেনি বরং  ফেনসিডিল ১ হাজার থেকে এখন এক বোতল ফেনসিডিল বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৬শ টাকা, ছোট ইয়াবা ২শ ও বড় ইয়াবা ৫-৬শ টাকা। সন্ধ্যার পর মাদক স্পটগুলোতে মাদকসেবীদের আনাগোনা লক্ষনীয়। মাদকসেবীরাও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার পর হাতে পাচ্ছে মাদক। পরদিন মাদক দ্রুত হাতে পেতে মাদকসেবীরা অগ্রীম টাকা তুলে দিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়োজিত লোকজনদের হাতে। মাদকের কড়ালগ্রাস থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করায় চরম  খেসারত দিতে হয়েছে এক নিরীহ দিন মজুরের। সে নিজেই এখন এক মাদক মামলার জেলখাটা আসামী।  মাদক ব্যবসায়ীদের অবস্থান ও মাদকসহ গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে সহায়তা করলেও  পুলিশ বিশ^স্ততা রাখছেনা। এসব খবর পুলিশ ফাঁস করে দেয়ায় সাধারণ মানুষকে  বিনা অপরাধে ইয়াবা মামলায় জেলহাজতে যেতে হচ্ছে বলে এমন অভিযোগ উঠে অসাধূ পুলিশের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ৯টি ওয়ার্ড ও বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে বন্দর থানা। এ থানায় এলাকায় ৩ শতাধীক স্পটে মাদক বিক্রিতা রয়েছেন প্রায় শতাধীক। এর মধ্যে পুলিশের তালিকাভূক্ত রয়েছে অর্ধশত। হিটলিষ্টে রয়েছে দুই ডর্জনের উপরে। এসব মাদক কারবারীরা ভিন্ন কৌশলে  তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। যেসব স্পটে এখনো মাদক বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছে। স্পটগুলো হলো মদনপুর ইউপি লাউসার নেহাল সরদারেরবাগ, কেওঢালা, বাগদোবাড়িয়া, পুরান মদনপুর বড় সাহেববাড়ি ও দেওয়ানবাগ গ্রামে প্রকাশ্যে চলছে মাদক বেচাকেনা। এসব মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে করে অস্ত্র ডাকাতি ও মাদকসহ এক ডর্জন মামলার আসামী রুবেল,মোহাম্মদ আলী, শহিদুল্লাহ। ধামগড় ইউপি ইস্পাহানী গ্রামের হাসান ও হোসাইন দুই ভাই ও শাহপরান। গোকুলদাশেরবাগ গ্রামের কবির হোসেন (বর্তমান ইউপি সদস্য) ফেন্সী কবির ও মফিজুল, লেংড়া মফিজ,  রাজু।  হালুয়াপাড়া গ্রামের মৃত ইসলাম মিয়ার ছেলে আফজাল, কামতাল চিড়ইপাড়া, রফিকুল, আয়নাল হক ও তার স্ত্রী হালিমা। মুছাপুর ইউপি লাঙ্গলবন্দ নগর এলাকার ফজলুল হকের ছেলে রুবেল ও আলী আকবরের ছেলে ইয়াবা রুবেল, যোগীপাড়া গ্রামের আফছর উদ্দিনের ছেলে রফিক ও ফুলচাঁন মিয়ার জামাতা জামাই ফারুক।নাসিক ২৭নং ওয়ার্ড  লক্ষনখোলা এলাকার আক্তার হোসেন, মারবেল, শুকুর আলী, সরদার, হরিপুর এলাকায় বাদশা মিয়া, আলাউদ্দিন, কবির, তালু ও জনি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ২০ নং ওয়ার্ড এলাকায় সাগর, ইয়াবা  সোহেল,  নুর আলম,  সুমন, স¤্রাট, রাজিব, মাহমুদনগর এলাকার ব্লেট জনি, চাঁনপুইরা আলমগীর। ১৯নং ওয়ার্ড এলাকায় মদনগঞ্জ খালপারের রোমান,আলাউদ্দিন রাকিব। ২১নং ওয়ার্ড এলাকায় সুমন, রফিক, ফয়সাল, ভুইট্টা আবুল ও বগা ছগির ও দুলু ও সোনাকান্দার আসাদ। নাসিক ২৫নং ওয়ার্ড  লক্ষনখোলা এলাকায় আক্তার হোসেন, মারবেল, শুকুর আলী, সরদার, হরিপুর এলাকায় বাদশা মিয়া,আলাউদ্দিন, কবির, তালু ও জনি, হক বেপারীর ছেলে জসিমউদ্দিন জসু, আক্তার, চৌরাপাড়ার নুরাকানার ছেলে মাদক স¤্রাট আক্তার ওরফে পাতলা খান, মজিবর ওরফে মইজ্যার ছেলে মাদক স¤্রাট আকবর , মিলন মিয়ার ছেলে মাদক স¤্রাট আলআমিন, আতিকুর, মন্না খলিফার ছেলে মাহফুজ, খালেক মিযার ছেলে আলীআজম, নাসির, আনু, নুরুজামাল, ধনু,মনির , হুমায়ুন, মিছির আলীর ছেলে আরিফ, ফিরোজ মুন্সীর ছেলে সাক্কু ,মুক্কা, কামাল, মুতি মিয়ার ছেলে সাদ্দাম অভিযানেও দেদারসে ইয়াবা , গাজা ও ফেনসিডিলের ব্যবসা করছে।

এসব স্পটে এক বোতল ফেনসিডিল ১৫ থেকে ১৬’শ টাকা। ছোট ইয়াবা ট্যাবলেট ২’শ ও বড় ইয়াবা ট্যাবলেট ৫’শ টাকা বিক্রি হচ্ছে।  সবচেয়ে বেশী মাদক  বেচাকেনা হচ্ছে মদনপুরের রুবেল, মোহাম্মদ আলীর স্পটে। মদনপুর ইউনিয়ন এলাকায় রুবেল,মোহাম্মদ আলীর মাদক স্পটে রহস্যজনক কারণে পুলিশের  তৎপরতা নেই। এ কারণে তাদের স্পটে র্নিবিঘেœ মাদক সেবীরা মাদক সেবন করতে ছুটে আসে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  মদনপুর লাউসার গ্রামের এক ভুক্তভোগী জানান, তার রিকশায় চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী রুবেল তার এক লোককে মাদকসহ তুলে দেন । পরে ওই ব্যক্তিকে মাদকসহ রিকশা থেকে নামিয়ে দেন তিনি। পর দিন এ খবর  পৌছে যায় রুবেলের কাছে। তার লোককে রিকশা থেকে নামিয়ে দেওয়ার অপরাধে বেধরক মারধর করে । মারধর খেয়ে মনে প্রচন্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হয় তার। এর পর থেকে রুবেলকে পুলিশের কাছে ধরে দিতে উঠে পড়ে লাগেন। পুলিশের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করেন। এর কয়েকদিন পর রুবেল এক বাড়িতে রাতে থাকার জন্য অবস্থান নেয়। এ খবর মুহুর্তের মধ্যে পৌছে দেয় পুলিশকে। রুবেলকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে সহায়তা করলেও রুবেল আর গ্রেপ্তার হয়নি। কিন্তু  পরদিন তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে ২৫ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে আদালতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশকে সহায়তা করার অপরাধে বিনা অপরাধে জেলাখাটেছে একজন নিরঅপরাধ ব্যক্তি ও পরিবার খেয়ে না খেয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল একটি মাস। এসব বিষয়ে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জনসাধারণ।