আ’লীগ নেতার বিড়াল মারার অভিযোগে দিনমজুর আটক, কৃষক বাড়ি ছাড়া

456

বন্দর প্রতিনিধিঃ বন্দরে আওয়ামীলীগ নেতার বিড়াল মেরে ফেলার অভিযোগে দিনমজুর মোস্তফা মিয়া(৫২)কে  আটক করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে ধামগড় ইউপি কামতাল গ্রামের খালপার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।

দূর্গন্ধ ছড়িয়েছে বলে বিড়াল অন্যত্রে নিয়ে ফেলে দেয়ায় হযরত আলী নামের কৃষকের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিড়াল মরে যাওয়ার ঘটনাকে পুঁজি করে পুলিশী হয়রানীর সুষ্ট বিচার দাবি করেছেন গ্রামবাসী ও ভূক্তভোগী পরিবার।

গ্রামবাসী জানান, ২/৩ মাস যাবৎ কয়েকটি পাগলা বিড়াল গ্রামের হাস-মুরগী ও কবুতর  মেরে ফেলেছে। বিড়াল এসমস্ত ক্ষতিসাধন করে বলে মোস্তফা মিয়া একদিন বিড়াল মারার চেষ্টা করেছিল। শনিবার রাত থেকে হযরত আলীর বাড়ির পাশে একটি বিড়াল মরে পচে দূর্গন্ধ বের হচ্ছে। বিড়াল মরার পচা দূর্গন্ধে আশপাশের বাড়িতে বসবাস করার অযোগ্য হয়ে পড়ে। রোববার সকালে হযরত আলী বিড়ালটি অন্যত্রে নিয়ে ফেলে দেয়। এরপর পাশের গ্রাম চিড়ইপাড়া কলোনীর মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন মৃত বিড়ালটি তার নিজের বলে দাবি করে। পরে তিনি কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সেপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে মৌখিক ভাবে বিড়াল মারার অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার সন্ধ্যায় এএসআই আমিরুল সঙ্গিয় ফোর্স নিয়ে দিনমজুর মোস্তফাকে তার বাড়ি থেকে ধরে আনেন। এসময় কৃষক হযরত আলীকে ধরে নিতে তার বাড়িতেওঅভিযান চালায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মোস্তফাকে ছেড়ে দিলেও পুলিশের ভয়ে বাড়িতে আসতে পারছে না কৃষক হযরত আলী। পুলিশ আতঙ্কে রয়েছে তার পরিবার।

দিনমজুর মোস্তফা মিয়া জানান, রোববার সন্ধ্যায় মাছ খামারে নাইট ডিউটি যাওয়ার জন্য খাইতে বসি। এসময় বাড়িতে ঘরের সামনে পুলিশ । ওই মুহুতে পুলিশ বলেন ইসমাইলের বিড়াল মারার ঘটনায় ওসি স্যার আপনাকে আমাদের সঙ্গে যেতে বলেছেন। এই কথা শুনেই আঁৎকে ওঠলাম। পরে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।পরে ওসি স্যার আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও সাশিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়।

কৃষক হযরত আলী জানান, বিড়াল মরার দূর্গন্ধে আশপাশের বাড়ি ঘরের কেউ থাকতে পারছে না। পরে মরা বিড়ালটি তুলে নিয়ে নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এ অপরাধে আমাকে ধরে নিতে বাড়িতে তল্লাসি চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ভয়ে বাড়িতে আসতে পারছি না।

ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ ৪নং ওয়ার্ড সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান নবীর হোসেন জানান,  বিড়াল মারার ঘটনায় পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এ রকম ঘটনা আর কোনো দিন শুনি নাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিড়াল মেরে ফেলার  ঘটনাটি ইসমাইল আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। পরে মোস্তফা মিয়াকে ডেকে এনে উভয়কে মিমাংসা করে দেয়া হয়।