প্রয়োজনে আরো কঠোর হস্তে অপরাধ দমন করব: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার

478

সময়ের চিন্তা ডট কমঃ অবশেষে রক্ষা পায়নি, পুলিশের হাতেই ধরা পড়ে বহুরূপী কুকর্মের হোতা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)রুবেল। ধনাঢ্য নারীদের ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা ও গহনা। সহকর্মী ও স্থানীয়রা হয়রানির ভয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে সাহস পায়নি।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গত ৮ই মার্চ এএসআই রুবেলের বাসা থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে। অভিযুক্ত এএসআই’র বিরুদ্ধে সম্প্রতি এক নারীকে আটকে রেখে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠে।

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্য কোচিং সেন্টার খুলে গত ২রা মার্চ ২০ চাকুরি প্রার্থীর কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে এএসআই শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করা হয় টাকা আত্নসাতকারী সেই এএসআই শাহাবুদ্দিনকে।

র‍্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সোমবার (২৩ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এই বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিনের বাসায় তল্লাশী চালিয়ে ৫ হাজার ৬২০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির  ৯ লাখ ৪০০ টাকা উদ্ধার করেছে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর পরিদর্শক সহ ৭ পুলিশ ও ৩ সোর্সের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রুজু করা হয়েছে। ফতুল্লার জামান নামে এক গরু খামারীকে ডাকাতি মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগে তার ছোট ভাই আমান রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে হাজির হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখিত আসামিরা হলো- নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা  পুলিশের পরির্দশক (ইন্সপেক্টর) মো. গিয়াস উদ্দিন, এসআই শহিদুল ইসলাম, এএসআই নাজিম উদ্দিন, এএসআই আমিনুল হক, কনস্টেবল হাদিউজ্জামান, কনস্টেবল ইব্রাহীম হোসেন, কনস্টেবল আফাজউদ্দিন

আদালতের আদেশ অমান্য করে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের কন্যা মিতুকে জোর পূর্বক নিজ গাড়ীতে তুলে ডিভোর্স করা স্বামীর বাড়িতে নিতে সহায়তা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি (আইসিপি) গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে।

শুধু মাদক ব্যবসায় কিংবা টাকা হাতিয়ে নেওয়াই নয়, ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে টাকা আদায়, জনগণের সাথে খারাপ ব্যবহারের মতো ঘটনা ছাড়াও রয়েছে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ। সর্বশেষ গত ২৬ আগষ্ট খাবার খেয়ে বিল না দেওয়ার প্রতিবাদ করলে দোকানীসহ তার পরিবারকে মারধরের অভিযোগ উঠে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে। এঘটনায় পুলিশের ৮ সদস্যকে প্রত্যাহারও করেছে উপরস্থরা।

পুরনো অভিযোগ ঘুষ ও দুর্নীতির বাইরে গিয়ে মাদক ব্যবসার মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন পুলিশের কনস্টেবল থেকে মাঠপর্যায়ের অসাধু কর্মকর্তারা। ফলে জঙ্গি দমন থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিসহ পুলিশের নানা সফলতা ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে শুরু যে পুলিশের দুর্নাম হচ্ছে এমন নয়, পুলিশের সাথে সাথে সরকারেরও দুর্নাম হচ্ছে। তাই জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতি দাবি থাকবে, বিষয়গুলো দিকে সুদৃষ্টি দেওয়া। পাশাপাশি এ ধরণের পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তীর ব্যবস্থা করা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন বলেন, অতীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের যে সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তার বিরোদ্ধে আমরা তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামীতেও যদি কেউ অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়ায়, তাহলে তাদের বিরোদ্ধে আমাদের আইনি ব্যবস্থা চলমান থাকবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর হস্তে অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।