সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ সোনারগাঁয়ের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সকল দাবি-দাওয়া পূরণ করে আসছেন বলে দাবি করেছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের নেতৃবৃন্দ। গতকাল শনিবার দুপুরে পৌরসভার পানাম নগরীস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরে উপজেলার সকল শহীদ, যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ দাবি জানান।
এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদ্য সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, সোনারগাঁয়ের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় আমি স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া বলেন, সোনারগাঁয়ের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণে আমরা দীর্ঘদিন যাবত একটি বিজয় স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের স্বপ্ন দেখে আসছিলাম। এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার প্রচেষ্টায় আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এজন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই।
ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত¡াবধায়ক ও সঞ্চালকের দায়িত্বে থাকা সোনারগাঁ উপজেলার সদ্য সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনী বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার কাছে যখন যা চেয়েছি তিনি আমাদেরকে তাই দিয়েছেন। তিনি উদ্যোগ না নিলে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স হতো না। সোনারগাঁয়ের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণে পৌরসভার শহীদ মজনু পার্কে নির্মিত বিজয় স্মৃতি স্তম্ভ তারই অবদান। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বরে আমরা তার কাছে বিজয় স্মৃতি স্তম্ভটির সৌন্দর্য বর্ধন করার দাবি জানিয়েছিলাম। তিনি এ বছর ১৬ ডিসেম্বর আসার পূর্বেই আমাদের সেই দাবি পূরণ করেছেন। স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা এই বিজয় স্মৃতি স্তম্ভের স্বপ্ন দেখে আসছিলাম। এমপি খোকা আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন।
আসন্ন সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সদ্য সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনী বলেন, আমরা সোনারগাঁয়ের মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার লোক। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই কাজ করবো।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমার পিতার মত। আপনারা আমাকে সন্তান মনে করে যখন যা দাবি করেছেন আমি তা পূরণ করতে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি। আমি আপনাদের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে জানতে পারি যে আপনাদের ফাইল ডিসি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। তখন আমি নিজে ডিসি অফিসে গিয়ে ধূলা-বালিতে পড়ে থাকা সেই ফাইল খুঁজে বের করিয়েছি। এরপর এই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য মাত্র ১ হাজার ১ টাকায় সরকারের কাছে জমি বরাদ্দের দাবি জানিয়েছি। আমার দাবির প্রেক্ষিতে সরকার সারাদেশে মাত্র ১ হাজার ১ টাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এমপি খোকা বলেন, আমি যখন দেখলাম সোনারগাঁয়ের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোন স্মৃতি স্তম্ভ নেই তখন পৌরসভার চিলারবাগস্থিত শহীদ মজনু পার্কে তাদের স্মরণে একটি বিজয় স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করেছি। এরপর সম্প্রতি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিজয় স্মৃতি স্তম্ভের সৌন্দর্য বর্ধনের পর আজ তা উদ্বোধন করলাম। তাছাড়া খুব শীঘ্রই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় এবং এর সাথে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের জন্য অফিস কক্ষের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এছাড়া আমি মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। সনমান্দীতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তৈরী করা হচ্ছে। আল্লাহ তা’য়ালা যদি আগামীতে আমাকে আবারো সংসদ সদস্য হিসেবে কবুল করেন তাহলে আমাকে তো পাশে পাবেনই, আর কবুল না করলেও আপনারা যখন যেটা চাবেন আমি সন্তান হিসেবে তা পূরণে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবো।
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- নারায়ণগঞ্জ জেলার সদ্য সাবেক ডেপুটি কমান্ডার-১ অ্যাডভোকেট নূরুল হুদা, সদ্য সাবেক ডেপুটি কমান্ডার-২ মোহাম্মদ আলী চেয়ারম্যান, সাবেক জেলা ইউনিট কমান্ডার খামিউল্লাহ মিলন, মোগরাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, শম্ভুপুরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, নারায়ণগঞ্জের যুদ্ধকালীন গ্রæপ কমান্ডার আমিনুর রহমান, সোনারগাঁ উপজেলার সদ্য সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সোহেল রানা, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুলতান আহমেদ মোল্লা বাদশা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট নূরজাহান প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সোনারগাঁ উপজেলার সদ্য সাবেক সহকারি কমান্ডার জাহিদ হোসেন, সেলিম রেজা, মহিউদ্দিন মাহী, সদ্য সাবেক অর্থ কমান্ডার আব্দুল বাতেন মোল্লা, সদ্য সাবেক সদস্য মফিজুল ইসলাম খাঁন, সদ্য সাবেক পৌরসভা কমান্ডার হাবিবুর রহমান কাজল, উপজেলার সকল ইউনিয়নের সদ্য সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারবৃন্দ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সোনিয়া আক্তার, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান সহ উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানবৃন্দ।