সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :সাতক্ষীরায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংখ্যালঘু নিয়ে কুটুক্তির এক গোপন অডিও ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনায় কুটুক্তিকারী মুকুল মাষ্টারকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, সাতক্ষীরা সদরের ব্রহ্মরাজপুর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলাম সরদার (হারু সরদার) এর পুত্র মমিনুর রহমান মুকুল ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি এলাকায় মুকুল মাষ্টার নামে পরিচিত। এই মুকুল মাষ্টার সব সময় আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিদ্বেষী।
আমাদের এ প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌছানো একটি অডিও রেকর্ডিং থেকে জানা যায়, ডিবি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষকদের সাথে প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল উচ্চ-বাচ্য করছিল। এরই এক পর্যায়ে মুকুল মাষ্টার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংখ্যালঘু নিয়ে কুটুক্তি করে।
ওই রেকর্ডিংয়ে কুটুক্তির অংশ বিশেষ “আপনি মনে করতিছেন হিন্দুর রাজত্ব, হাসিনার রাজত্ব না, আর আমরা এ জাগায় ঘোড়ার ঘাস কাটবো বসি বসি, আর হাতে চুড়ি পরে বসি থাকবো?”।
সংশ্লিষ্ট স্কুলের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে সহকারী শিক্ষক রমেশ সরদার ও সুকুমার সরকারের সাথে মুকুল মাষ্টারের অফিস কক্ষে স্কুলের একটি বিষয় নিয়ে কথা-বার্তা হচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে মুকুল মাষ্টার এই কুটুক্তি করে। তার কুটুক্তির সব কিছু রেকর্ডিং করতে না পারলেও তিনি যখন বিভিন্ন অশালীন কথা-বার্তা বলছিলেন ঠিক তখনই উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে কেউ গোপনে মুকুল মাষ্টারের এই কুটুক্তি গোপনে রেকর্ডিং করে রাখেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, মুকুল মাষ্টারের হাতে ইতিপূর্বে একজন সংখ্যালঘু শিক্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এছাড়া স্কুলের পিয়ন থেকে শুরু করে আরও কয়েকজন শিক্ষক তার হাতে মারপিট, লাঞ্চিত ও মারপিটের শিকার হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) একটি বিশ্বস্থ সূত্রের মাধ্যম থেকে কুটুক্তির অডিও টি ফাঁস হয়ে পড়ে। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা যায়, মুকুল মাষ্টার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সেক্রেটারী। তার নামে ২টি নাশকতার মামলা রয়েছে। সাতক্ষীরা থানার মামলা নং-০৪, তাং ০৩/০১/২০১৪ ইং। এই মামলার অভিযোগ পত্র নং-৮৫৭, তাং-২৭/১০/২০১৪ ইং। এই মামলায় সে চার্জশীটভ‚ক্ত আসামী।
অপরটি হলো সাতক্ষীরা থানার মামলা নং-৪৫, তাং-২৮/১২/২০১৭ ইং। এই মামলায় মুকুল মাষ্টার এজাহার নামীয় ৭নং আসামী।
এ ব্যাপারে মুকুল মাষ্টার জানায়, ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীর পদ থেকে আমি অব্যাহতি নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ও সংখ্যালঘু নিয়ে কুটুক্তির বিষয়ে স্বীকার করে বলেন, আমার মাথা ঠিক ছিল না। এটা আমার ভুল হয়েছে। এ বিষয়ে রিপোর্ট না করার জন্যও অনুরোধ জানান তিনি।
এ বিষয়ে ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলীপ কুমার মল্লিক, সহ-সভাপতি শেখ আব্দুস ছালাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক অজিয়ার রহমান এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, মকুল মাষ্টারের আচারণ বরাবরই জঘন্য। ঘটনাটি আমরা অনেক আগেই শুনেছি কিন্তু প্রমানের অভাবে কিছুই করতে পারছিলাম না। কুটুক্তির প্রমান পেয়েই আমরা জেলা ও থানা আ’লীগ নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি। তাঁর বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় তারা অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবীও জানান।