স্টাফ রিপোর্টারঃ আয়শা আক্তার মিতালী (২১) নামের এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করেছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জ থানা পুলিশ। ওই গৃহবধু নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার পাচবাড়ীয়া গ্রামের মোঃ জামান ভূূইয়ার ছেলে মোঃ শফিকুল ইসলাম টিপু (২৪) এর স্ত্রী। গৃহবধুর মৃত্যু রহস্যজনক হওয়া গত ২ অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখ সকালে স্বামীর ভাড়াটিয়া বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জ থানাধীন কদমতলী কলেজপাড়া নাসির উল্লাহ সাহেবের ৪র্থ বাড়ির নীচ তলার দক্ষিণ পার্শের ফ্লাট হতে মরদেহ উদ্ধার করে দুপুরে জেলার মর্গে ময়না তদন্ত করা হয়।
মিতালীর বাবা আলম মিয়া জানা, গত ১ অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখ ভোরে রাত আনুমানিক ৪টার সময় আমার মেয়ের জামাই শফিকুল ইসলাম টিপু আমাকে মোবাইল ফোনে জানায় মিতালি গ্রিলের সাথে গলায় ফাঁস দিয়েছে এবং তাকে (মিতালি) কে হাসপাতালে নিয়া যাইতেছে। এই খবর শুনে আমরা তাৎক্ষনিক খানপুর ৩০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এসে অনেক খোঁজা খুঁজি করে না পেয়ে হাসপাতালের স্টাফদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন মিতালী নামের এক জন মহিলাকে এক ব্যাক্তি হাসপাতালে নিয়া আসছিলো, কিন্তু ঐ মহিলা হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে তাকে বাসায় নিয়ে গেছে। এই কথা শুনে আমি আমার মেয়ের জামাই এর উল্লেখিত ভাড়াটিয়া বাসায় চলে যাই, গিয়ে দেখি আমার মেয়ের লাশ ঘরের মেঝেতে সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা, তখন আমি থানা পুলিশকে সংবাদ দেই, পুলিশ এসে আমার মেয়ের লাশ উলোটপালোট করিয়া গলায় এবং শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাইয়া লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
মিতালীর বাবা আলম মিয়া আরো জানায়, আমার মেয়ে মিতালির শরীরে অসংখ আঘাতের চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও আমাকে পুলিশ অপমৃত্যু মামলা করতে বাধ্য করিয়েছে। যার মামলা নাম্বার (নং-৩৬) /২/১০/২০১৮। আমি কোন উপায় অন্তর না পেয়ে পুলিশ সুপার মহাদয়ের কাছে গেলে, পুলিশ সুপার স্যার আমার পুরো ঘটনা শুনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে ফোন করে আসামিকে আটক করতে বলেন এবং মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই নাসির আহম্মেদকে ডেকে পাঠান।
মিতালির বাবার অভিযোগ এতো তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কোন অদৃশ্য কারনে আসামিদের গ্রেপ্তার করছেন না? তিনি জানিয়েছেন মেয়ে হত্যার বিচার পাইতে প্রয়োজনে মানবতার মাতা মাদার আফ হিউম্যানিটি বাংলাদেশর প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাবেন।
মিতালির মামা মোঃ শরিফ জানিয়েছে, গত দুই বছর আগে আমার ভাগনী মিতালি আর টিপু তাদের বাবা মার অমতে দুজন দুজকে ভালোবেসে বিয়ে করে। মিতালির বাবা মা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়ের বিষয়টা মেনে নেয়, এপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে জামাই টিপু আমাদের কাছ থেকে কখনও দুই লক্ষ, কখনও এক লক্ষ টাকা এভাবে নিতে থাকে সর্বশেষ গত ২৫ মে ২০১৭ইং তারিখ একলক্ষ টাকা ধার নিয়েছে যা ফেরত দেওয়ার কথা কিন্ত দেয়নি। মৃত্যুর আগের দিন মিতালি এই টাকা ফেরত চাইলে জামাই টিপু টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং মিতালিকে বলে এখনও সময় আছে তোর বাবাকে আগামী একদিনের মধ্যে আরও তিন লক্ষ টাকা নিয়ে আমার মায়ের সাথে দেখা করতে বলবি, যার প্রমাণ সরুপ অডিও রেকর্ড আছে। আর আমার ভাগ্নীর পা বাধা ছিল মৃত্যুর সময়। তাই আমরা পুলিশকে বার বার বলেছি যে পা বাধা অবস্থায় একজন মানুষ কি করে গলায় ফাঁস দেয়। এস, আই আমাদের কোনো কথাই শুনলো না।
মিতালির মামা মোঃ শরিফ আরও বলেন, আমার ভাগ্নি মিতালি খুবই ধৈর্যশীল একটা মেয়ে ও আত্নহত্যা করতে পারে না ওকে হত্যা করা হয়েছে, আমার ভাগ্নিকে যারা হত্যা করেছে প্রশাসন যাতে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করে। আমারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অনেক বার গেয়েছি থানায় মামলা নেয়নি কোর্টে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
মিতালির লাশ উদ্ধার কারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই নাসির আহম্মেদ এর কাছে জানতে তার মুঠো ফোনে করলে তিনি সার্কেল অফিসে মিটিং এ আছে বলে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।