সময়ের চিন্তা ডট কম: শোক র্যালী থেকে বৃহৎ ঈদ জামাতের পর এবার স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশের আয়োজনের মাধ্যমে নতুন করে আরেকটি ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এমপি আলহাজ্ব এ কে এম শামীম ওসমান। বিএনপি জামায়াতের ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ থেকেই ঘন্টা বাজিয়ে বাংলাদেশকে জাগানোর প্রত্যয়ে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে ইতিমধ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি।
২৭ই অক্টোবর শনিবার দুপুর ৩ টায় ফতুল্লাস্থ পৌর ওসমানী স্টেডিয়াম সংলগ্ন শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এই মহাসমাবেশ। তবে মহাসমাবেশে থাকছেনা কোন প্রধান অতিথি। অর্থাৎ সমাবেশস্থলে উপস্থিত সকল নেতাকর্মীই থাকবেন এই মহাসমাবেশের প্রধান অতিথি। আর তাই বাংলাদেশে এই প্রথম প্রধান অতিথি ব্যাতীত আয়োজিত কোন রাজনৈতিক সমাবেশ যদি শেষতক সফল হয় তবে শামীম ওসমান আরেকবার রাজনীতিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখাবেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।কারন, শুধুমাত্র একজন এমপির আয়োজনে প্রায় ২ লাখ নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশ করাটা যেমন চ্যালেঞ্জিং তেমনি তা সফল করতে পারলে ইতিহাস গড়াটাও হবে স্বাভাবিক।
জানাগেছে, গত ৪ অক্টোবর ইসদাইরস্থ বাংলা ভবন কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে ২৭ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন শামীম ওসমান।
কেননা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে গত বছরের ১২ আগষ্ট নগরীতে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ শোক র্যালীর আয়োজন করে ইতিহাস গড়েছিলেন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এই এমপি শামীম ওসমান। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সেদিন শোক র্যালীতে ঢল নেমেছিল হাজার হাজার জনতার ও নেতা কর্মীদের। এরপর গত আগষ্ট মাসে অনুষ্ঠিত কোরবানীর ঈদের সময় সর্বপ্রথম নারায়ণগঞ্জে সর্ববৃহৎ ঈদের জামাতের আয়োজন করে ইতিহাস গড়েছিলেন শামীম ওসমান।
এখন নারায়ণগঞ্জে মহাসমাবেশের আয়োজন করে আবারো ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন শামীম ওসমান। ইতিপূর্বেই এই সমাবেশকে ঘিরে একাধিক প্রস্তুতিমূলক সভায় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘ইতিহাস সাক্ষী, নারায়ণগঞ্জ জাগলে জেগে উঠে বাংলাদেশ। তাই ২৭ই অক্টোবরের মিটিং হলো ঘণ্টা বাজানোর মিটিং। নারায়ণগঞ্জ থেকেই আমরা বাংলাদেশের ঘন্টা বাজাবো। সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে মাঠে নামবেন। নারায়ণগঞ্জে বিএনপি জামায়াতকে কোন ধরনের অরাজকতা করতে দিব না। অনেকক্ষণ ধৈর্য্য ধরেছি। জনগণের জন্য কাজ করেছি। আমরা নারায়ণগঞ্জে ঘণ্টা বাজাতে চাই, সারা বাংলাদেশকে মেসেজ দিতে চাই। যার যার দায়িত্ব নিয়ে হাজির হয়ে যাবেন। এই মিটিং নারায়ণগঞ্জের জন্য না। আমরা শুরু করবো। জেগেছে নারায়ণগঞ্জ, জাগবে বাংলাদেশ।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবেই সর্বমহলে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান। বিগত ১৯৯৬ সালে প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর যাকে সন্ত্রাসীরা বানিয়েছিল তাদের ‘গডফাদার’। ২০১৪ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি হয়ে যান নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ণের রূপকার। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে যৌবনকাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের জন্যই রাজনীতি ময়দানে শামীম ওসমান সর্বদা করে গেছেন লড়াই। দল, দেশ ও নিজ জেলাবাসী সহ স্বয়ং দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার জন্যও নিজের জীবনকে উৎস্বর্গ করে বিগত সময়ের আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তেকখনো কুন্ঠাবোধ করেন নি তিনি।
শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের এতটাই সাহসী প্রভাবশালী নেতা ছিলেন যিনি প্রথমবার সাংসদ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ শহরের মাটিতে প্রতিকী মঞ্চ বানিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে ছিলেন। গুটি কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের প্রবেশ মুখে আটকে দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার লং মার্চের গাড়ী। জামায়াতকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছিলেন নারায়ণগঞ্জে।
তিনি সেই শামীম ওসমান, ২০০২ সাল থেকে ০৬’ সাল পর্যন্ত যার মিছিল ঢাকায় আওয়ামীলীগের কোন সমাবেশে না গেলে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাও সমাবেশে যেতেন না। আগে শামীম ওসমানকে ফোন করে জানতেন, তরপরে সমাবেশে যেতেন। যেই কারনে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও একদিন গর্ব করে বলেছিলেন, ‘আমার শামীম ওসমানের মত যদি দশ জন শামীম ওসমান সারা বাংলাদেশে থাকে তাহলে আমার কোন কিছুর প্রয়োজন হবে না।’
তাই তো শামীম ওসমান আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাতৃতুল্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনতে প্রতিনিয়ত জনগণকে নৌকায় ভোট দেয়ার উদ্বাত্ত আহবান জানিয়ে যাচ্ছেন।