একাধীক মিথ্যে মামলা মাথায় নিয়েও সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি

505

সময়ের চিন্তা ডট কম: একাধীক মিথ্যে মামলা মাথায় নিয়েও আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র নেতারা। ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবীতে অনুপ্রানিত হয়ে নতুন করে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা। তাই আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সুষ্ঠ নির্বাচনী পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সর্ব শক্তি নিয়োগ করে আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মনে করেন তারা।

সূত্রে প্রকাশ, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দামামা বাজতে শুরু হয়ে গেছে। আর মাত্র এক সপ্তাহ পরেই ঘোষনা হবে নির্বাচনের তফসিল। সরকারী দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী গনসংযোগ। অথচ নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একের পর এক মামলা হামলায় জর্জরিত হয়ে জনগন থেকে ক্রমেই দুরে সরে যাচ্ছেন। তাছাড়া দলের চেয়ারপার্সণ বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আটক রয়েছেন। এতো অল্প সময়ের মধ্যে একদিকে দলীয় চেয়ারপার্সণ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, অন্যদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিবেশ তৈরী করতে হবে। আর আন্দোলন সংগ্রামের সুতিকাগার নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র দায়িত্বই তাই অন্যদের চেয়ে একটু বেশী। এমতাবস্থায় দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে জোট গঠন করায় নতুন করে আশার আলো দেখছেন তারা। দীর্ঘ প্রায় এক যুগের আন্দোলন সংগ্রামের ইতি টানতে তাই জোটগতভাবে শেষ চেষ্টা করতে মরিয়া চেষ্টা চালাবে তারা।

সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর আজ অবধি আর ক্ষমতার স্বাদ পায়নি দলটি। এতো দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকার অভিজ্ঞতা ছিলো না দলটির নেতাকর্মীদের। তাই এ সময়টাতে রাজনৈতিক মামলা হামলায় নাজেহাল হয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দিশেহারা হয়ে পরেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। চলতি বছরের ৮ ফেব্রæয়ারী বিএনপি চেয়ারপার্সণ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায় ঘোষনা করে আদালত। সেই থেকে দলীয় চেয়ারপার্সণ বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি। আর চেয়ারপার্সণের মুক্তির দাবীতে শুরু হয় শন্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি। এ আন্দোলন করতে গিয়েও নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কর্মী সমর্থকদের নামেও একাধীক মামলা থাকায় চরম বিপর্যস্ত অবস্থা হয় তাদের।

সূত্র জানায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলার রায়ের দিন ধার্য ছিলো ৮ ফেব্রæয়ারী। রায় ঘোষনার দিন নির্ধারণের পর থেকেই ‘আমার নেত্রী, আমার মা, বন্দি হতে দেবো না’ শ্লোগানে বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে খালেদা জিয়ার সাজা প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গরম করে রেখেছিলো নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা। আর এই রায়কে কেন্দ্র করে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৭টি থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে পুলিশের দায়েরকৃত ১৩টি মামলায় স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রায় ৭শ’ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়।

আর গত পবিত্র ঈদুল আযহার পর থেকে আবারো নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র উপর বেপরোয়া হয়ে উঠে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় একের পর এক মামলায় আসামী হয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা তাদের। নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানায় প্রায় ৩০টি নাশকতার মামলায় প্রায় সহস্রাধীক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়। ফলে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামতো দুরের কথা, বাড়ি ঘরে থাকাও তাদের জন্য দুরূহ হয়ে পরে।

দলের এই চরম ক্রান্তিকালে নিজেদের ঘুরে দাড়ানোর জন্য নতুন করে প্রাণের সঞ্চার হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। যে কোন মূল্যে আন্দোলন সংগ্রাম করে দলীয় চেয়ারপার্সণ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরী করার চ্যালেঞ্জ এখন তাদের সামনে।