সোনারগাঁ প্রতিনিধি:আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মাছুম চৌধুরী ও যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম স্বপন গত ৮ অক্টোবর রাতের আধারে তাদের সঙ্গীয় দলবল নিয়ে জায়গাটি দখল করতে গেলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জাহিদুল ইসলাম স্বপন ও আনিছুর রহমান আলমগীরসহ তিন জনকে আটক করে। পরের দিন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তি বিষয়টি মিমাংসা করার শর্তে থানা থেকে স্বপনকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিচ্ছে সে। সম্প্রতি সোনারগাঁ থানার সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন চন্দ্র বসাকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের ও পুলিশ হেডকোয়াটারে অভিযোগ ও ওসি মোরশেদ আলম ও এস আই সাধনের অপসরণ ও তাদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করিয়েছে যুবলীগ নেতা স্বপন। বিষয়টি নিয়ে সোনারগাঁ থানাও ওসি মোরশেদ আলমের মুখোমুখি হলে তিনি সাংভাদিকদের এসব কথা বলেন।
এসময় স্বপনকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেয়া সেই জিম্মাদার সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্বপনকে থানা আনার খবর শুনে আমরা থানায় এসে ওসি সাহেব বিষয়টি আমরা মীমাংসা করব এই মর্মে স্বপনকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাই। পরের দিন আমরা বসে মীমাংসা করব স্বপনকে ডাকব এমন সময় শুনি সে নাকি ওসির বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছে। আমার ধারণা আমাদের সাথে আলোচনা না করে সে অন্যকারো কাছে দ্বারস্থ হয়েছে সরকারের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করার জন্য। তিনি বলেন যুবলীগের সদস্য হয়েও সে বিএনপি জামাতের পরামর্শে প্রশাসনের ভাবমূর্তী ও সরকারের ভাবমূর্তী ক্ষুন্নে কাজ করছে।
জমি নিয়ে বিরোধে সোনারগাঁ থানার ওসিকে ফাঁসাতে চাইছেন সোনারগাঁয়ের এক যুবলীগ নেতা। এ বিরোধের বলি বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক ও সেকেন্ড অফিসারকে।
জানাগেছে, সম্প্রতি যুবলীগ নেতা মাছুম চৌধুরী ও মোস্তফা কামালের মধ্যে সোনারগাঁ পৌরসভার দত্তপাড়া এলাকায় একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২ অক্টোবর সানিফয়েলস অ্যান্ড পলিমার ইন্ডাষ্ট্রিজের মালিক মোস্তফা কামাল তার ক্রয়কৃত জায়গায় যাতে করে কেউ দখলে যেতে না পারে সেজন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি কোর্ট পিটিশন দায়ের করেন।
ছাড়িয়ে নেওয়ার পর গত ১১ অক্টোবর যুবলীগ নেতা জাহিদুর ইসলাম স্বপন বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম ও এসআই সাধর চন্দ্র বসাককে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ক্রসফায়ার ও শারিরিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে তার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।
এদিকে সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন চন্দ্র বসাকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে কমিউনিটি পুলিশিং সোনারগাঁ শাখার আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলার কমিউনিটি পুলিশিং সোনারগাঁ শাখার সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি, যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম শহিদ, সনমান্দি ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকন, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি ইসমাঈল হোসেন, সাধারন সম্পাদক জাহ্ঙ্গাীর হোসেন, জামপুর ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি দেওয়ান কামাল হোসেন, মানবাধিকার কর্মী জাহানারা বেগম ও মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম ও সেকেন্ড অফিসার এসআই সাধন চন্দ্র বসাক অত্যন্ত নম্য ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির লোক তারা দীর্ঘদিন ধরে থানায় অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তারা যোগদানের পর এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সন্ত্রাস ও চাদাবাজ ভুমি দস্যুতা একেবারে কমে এসেছে। সবকিছু মিলিয়ে আইন শৃঙ্খলা ভাল অবস্থানে রয়েছে বলে জানান বক্তারা।
বক্তরা আরো বলেন, যুবলীগ নেতা মাসুম চৌধূরীর বিরুদ্ধে ভুমিদস্যু, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ ১০টি মামলা রয়েছে এবং অসমাজিক কার্যাকালাপসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অবিলম্বে সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম ও এসআই সাধন চন্দ্র বসাকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিষয়টি নিয়ে মামলার বাদি জাহিদুল ইসলাম স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিজ্ঞ আদালতে মামলা করছি। মামলাটির তদন্তের আদেশ এখনো পুলিশ সুপার পায়নি। এখনই দালাল চামচারা বলছে মামলাটি মিথ্যা। সত্য না মিথ্যা তা তদন্ত করবে পুলিশ।