সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা মহাজোটের প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় সোমবার রাতে উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ড ও পাড়া মহল্লায় হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ চার রাকাত শোকরানা নামাজ পড়ে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে। এছাড়া এশার নামাজের পর উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় ওলামায়ে কেরাম ও মুসল্লীরা শোকরানা দোয়ার আয়োজন করেন।
জানা যায়, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে কে হচ্ছেন মহাজোটের প্রার্থী’ এই বিষয়টিই গত কয়েক সপ্তাহ যাবত উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে মূল আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিনত হয়েছিলো। এনিয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও বেশ সরব ছিলেন। অবশেষে সোমবার সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকাকে মহাজোটের প্রার্থী ঘোষনা করায় রাতে উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ড ও পাড়া মহল্লায় হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ চার রাকাত শোকরানা নামাজ আদায় করে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। এসময় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তাস্থিত আইয়ুব প্লাজায় তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এলে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ তাকে শুভেচ্ছা জানান এবং এক বিশাল আনন্দ মিছিল করে মিষ্টি বিতরণ করেন। মিছিলটি মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে পৌরসভার শহীদ মজনু পার্ক ঘুরে পুনরায় মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় এসে শেষ হয়।
আনন্দ মিছিলে অংশ নেয়া সাধারন ভোটাররা জানান, লিয়াকত হোসেন খোকার উন্নয়নমুখী ও সেবামূলক রাজনীতির কারণে এ উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা প্রতিহিংসার রাজনীতির সমাপ্তি ঘটেছে। তিনি সোনারগাঁয়ের মানুষের মন জয় করার জন্য দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করেছেন। মাত্র ৫ বছরে তিনি যে উন্নয়ন করেছেন তা বিগত ২০ বছরেও হয়নি। তিনি গোটা উপজেলায় অসংখ্য রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট ও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মাণ করেছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও ওয়াশবøক নির্মাণ তারই অবদান। দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে জরাজীর্ণ হয়ে থাকা উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কগুলো তিনি সংস্কার করেছেন। গ্রামীন সড়কগুলোতে সিসি অথবা আরসিসি ঢালাই করে দিয়েছেন। উপজেলার এমন কোন মসজিদ ও মন্দির নেই যেখানে তার উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। তিনি এ উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন নির্মাণ করেছেন। তার হাত ধরেই সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরের পাশে নির্মিত হয়েছে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মাণ করেছে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মাণ করেছেন বিজয় স্তম্ভ। উপজেলার উত্তরাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নের মানুষ স্বাধীনতার পর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর যে হরিহরদী সেতুর স্বপ্ন দেখে আসছিলো’ এমপি খোকা তা বাস্তবায়িত করেছেন। তিনি নির্মাণ করেছেন বহু মানুষের আকাঙ্খিত ভাটিবন্দর সেতু। তার ঐক্যান্তিক প্রচেষ্টায় শম্ভুপুরা ইউনিয়নে নবীনগর থেকে সাবদী বাজার সেতুর অনুমোদন হয়েছে। শীঘ্রই এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
তাছাড়া বিগত দিনের এমপিরা সোনারগাঁয়ের উত্তরাঞ্চলবাসীর সাথে বিমাতার ন্যায় আচরন করলেও এমপি খোকার আমলে এই অঞ্চলের এমন কোন পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে উন্নয়ন হয়নি। উপজেলার অলিগলি ও রাস্তাঘাটে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য সোলার ল্যাম্প। কবরস্থানগুলোতে সোলার ল্যাম্প স্থাপন ও লাশ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। গত এক মাস পূর্বে তিনি ৩ শতাধিক উন্নয়নকাজের শুভ উদ্বোধন করেছেন। যেগুলোর কিছু কিছু ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকীগুলোর কাজ চলছে। এছাড়া উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে আনন্দবাজার পর্যন্ত সড়কটিতে আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী সংস্কারের অনুমোদন করিয়েছেন এমপি খোকা। জামপুর ইউনিয়নের বস্তল থেকে মাঝেরচর পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার কাজের অনুমোদন করিয়েছেন তিনি। নয়াপুর বাজার থেকে সাদিপুর পর্যন্ত সড়কটির উন্নয়নকাজের টেন্ডার হয়েছে। এই সড়কগুলোর কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।
এছাড়া এমপি খোকা উপজেলার খেঁটে খাওয়া সাধারন মানুষকে ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়েছেন। তাদের সুখ দুঃখের ভাগি হয়েছেন। তাই তাকে গরীবের বন্ধু উপাধি দেয়া হয়েছে। তার প্রচেষ্টায় গত ৫ বছর উপজেলাবাসী শান্তিতে বসবাস করেছে। এ কারণে ‘লিয়াকত হোসেন খোকা এবারো মহাজোটের প্রার্থী নির্বাচিত হোক’ এটাই ছিলো উপজেলার সাধারন ভোটারদের কামনা। আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সেই আশা পূরণ করেছে।