সোনারগাঁয়ে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ

437

স্টাফ রিপোর্টারঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ভূল চিকিৎসায় ছোঁয়ামনি নামের এক শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ তুলেছে নিহতের পরিবার। গতকাল বুধবার দুপুরে সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছোয়া মনির মা রুনা ইসলাম এ অভিযোগ তোলেন। এসময় উপস্থিত ছোঁয়ামনির বাবা কামরুল ইসলাম, গ্রামবাসী বাবুল মিয়া, মফিজুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, পলি আক্তার, শারমিন আক্তার, আয়েশা বেগম, ওসমান বেপারী, রাসেল মিয়া ইব্রাহিম, শামিম মিয়া প্রমুখ ছিলেন।

জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ভবনাথপুর গ্রামের কামরুল ইসলাম ও সাবেক ইউপি সদস্য রুনা ইসলাম দম্পতির ছোট মেয়ে ছোঁয়া মনির জ্বর হলে গত ২৩ অক্টোবর বিকেলে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থিত নতুন সেবা নামের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। ওই সময় হাসপাতালে ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন সুমন একজন চিকিৎসক ওই শিশুর চিকিৎসা করেন। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের লোকজন অভিযোগ তুলেন। এঘটনায় নিহত শিশুর আত্মীয়-¯^জন ও এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে ওই ক্লিনিক ঘেরাও করে ভাংচুরের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ  ঘটনাস্থলে গিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়ে তাদের শান্ত করে। পরে ২৫ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তানভীর আহম্মেদ চৌধুরীকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র শিশু কনসালটেন্ট ডাঃ মাহমুদা রহমান ও বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র শিশু কনসালটেন্ট ডাঃ মোহাম্মদ ওমর খালিদ ফয়সাল।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত শিশু ছোঁয়া মনির মা সাবেক ইউপি সদস্য রুনা ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার মেয়ের জ্বর হলে তাকে নতুন সেবা ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ডাঃ সাজ্জাদ হোসেন সুমন তার মেয়েকে দুটি ইনজেকশন পুশ করেন। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসলে তার শরীর নীল রঙ্গের হয়ে যায়। পরে ডাক্তার সুমনকে ফোন দিলে মেয়ের মাথায় পানি ঢাললে ঠিক হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। কিন্তু রাত ৮টার দিকে আমার মেয়ের শারিরিক অবস্থা আস্তে আস্তে অবনতি হতে থাকে। পরে একাধিকবার ডাক্তার সুমনকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। রাত ১২টার দিকে পুনরায় হাসপাতালে নেয়ার পথে আমার মেয়ে মারা যায়। তার মেয়ের মৃত্যু নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেননি এদিকে তদন্ত করতে গড়িমসি করেছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। দুমাস পেরিয়ে গেলেও এখনও তদন্ত শেষ করেনি। তদন্তের বিষয়ে ডাঃ তানভীর আহম্মেদ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে তার কক্ষ থেকে বের করে দেয়। পরে আমার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। আমি আমার মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো নাজেহালের শিকার হয়েছি। আমি আমার মেয়ের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনসহ দোষি ডাক্তারের শাস্তি দাবি করছি।

সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তানভীর আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে দুজন অন্য উপজেলার শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট সিভিল সার্জনের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে সঠিক সময়েই তদন্ত শেষ হয়েছে।