নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করায় র্যাব-১১ এর অভিযানে ঢাকার ধনিয়া এলাকা হতে গ্রেফতার ৭ জন। প্রতারিত ভিকটিম উদ্ধার করে ৬০ জন । র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সাথে সম্পৃক্তদের প্রায়শই র্যাবের নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ০২ জুলাই ২০২০ তারিখ বিকালে ডিএমপি ঢাকার কদমতলী থানাধীন ধনিয়া এলাকায় ইভারওয়ে সিকিউরিটি প্রাইভেট লিঃ নামের একটি অফিস কক্ষে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অনলাইনে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরী প্রদানের নামে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ০৭ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলোঃ আসামী ১। মোঃ মোসলেম উদ্দিন @রানা(৩০), ২। মোঃ ইসমাইল (৩১), ৩। মোঃ জালাল উদ্দিন (৫০), ৪। মোঃ শরিফ হোসেন (২০), ৫। শবনম আক্তার (৩২), ৬। সুমাইয়া আক্তার রিভা (১৮) ও ৭। বিথী আক্তার (৩০)। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার-০১টি, মোবাইল-০১টি, অফিসের সীল-০৫টি, চাকুরীর আবেদনপত্র-২০টি, বিপুল পরিমাণ ভূয়া চাকুরীর বিজ্ঞাপন, ভূক্তভোগীদের নিকট হতে অর্থ আদায়ের রশিদ, চাকুরী প্রার্থীদের নিবন্ধন ফরম ও নগদ অর্থ প্রভৃতি জব্দ করা হয়। এ সময় চাকুরী প্রত্যাশী ৬০ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কোম্পানীর নামে পত্রিকা, লিফলেট ও অনলাইনে লোভনীয় বেতনে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকুরী প্রত্যাশীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তাছাড়া চাকুরীর আবেদন ফরম, প্রশিক্ষণ ও ভালো পদে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রচুর নগদ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় এই প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোসলেম উদ্দিন @রানা। সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে Muslim Uddin Rana নামে ফেসবুক আইডি খুলে E.S.L. security service limited, online job bd I International Job search consultancy নামে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে বেকার যুবক যুবতীদের আকৃষ্ট করে। এই প্রতারক চক্র উক্ত কোম্পানীতে বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগের জন্য ফেসবুক, অনলাইন ও লিফলেটের মাধ্যমে ভূয়া বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রত্যেক চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আবেদন ফি বাবদ ৫০০ টাকা ও প্রশিক্ষণ বাবদ ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিত। কোম্পানীর অফিস এক্সিকিউটিভ অফিসার, কাষ্টমার সাপ্লাই অফিসার, কাষ্টমার রিলেশন অফিসার, মার্কেটিং ম্যানেজার, টেলি মাকেটিং অফিসার, রিক্রুটিং অফিসার প্রভৃতি পদে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে চাকুরী প্রত্যাশীদের প্রলুব্ধ করত। চাকুরী পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে ভয়-ভীতি, হুমকি এমনকি মারধরও করত। জিজ্ঞাসাবাদে আরোও জানা যায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে ইভারওয়ে সিকিউরিটি প্রাইভেট লিঃ নাম ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছে।
বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ কর্তৃক অনুসন্ধান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অদ্য ২ জুলাই ২০২০ তারিখ বিকালে একটি বিশেষ আভিযানিক দল কর্তৃক ডিএমপি ঢাকার কদমতলী থানাধীন ধনিয়া এলাকায় ইভারওয়ে সিকিউরিটি প্রাইভেট লিঃ এর অফিস কক্ষে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ৭ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপি ঢাকার কদমতলী থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।