সফিকুল ইসলাম ইমামঃ ঢাকা-চট্টগ্রামম মহাসড়ক থেকে সোনারগাঁ জাদুঘরের বাইপাস রাস্তাটির ইট-বালি ও পীছ উঠে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়ে চরম ভোগান্তীতে শিকার হচ্ছে এ পথে চলাচলরত পথচারী, পর্যটক ও নানা পেশার মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার ও বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ড্রেনের অভাবে সড়কটিতে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে রিকশা, অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও অন্যান্য যানবাহন। এতে প্রতি দিনই ঘটছে ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। রাস্তাটি দিয়ে ভোগান্তী নিয়ে প্রতিদিন হাজারো লোক চলাচল করলে রাস্তাটির সংস্কারের দায় নিচ্ছে না পৌরসভা ও সড়ক ও জনপথ বিভাগ। একে অপরের রাস্তা এই দোহাই নিয়ে ভোগান্তীতে ফেলেছে যাত্রী ও চালকদের।
জানা গেছে, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন থেকে টিপুরদী বাসট্যান্ডের দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। প্রতিদিন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ী, সহ সর্বস্তরের মানুষের চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের এসিআই হেলথ কেয়ারের সামনের অংশটি বর্তমানে চলাচলের একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার দুই ধারে উচু করে মার্কেট ও দোকানপাট গড়ে তোলার কারণে বৃষ্টির পানি সড়কে জমে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ ও ইটের খোয়া উঠে কয়েকটি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে পানি জমে সড়কটি যেন ছোট ছোট জলাশয়ে পরিণত হয়।
স্থানীয়রা জানান, সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, ঐতিহাসিক পানাম নগর, গোয়ালদী শাহী মসজিদ, টাকশাল, নীলকুঠি বেড়াতে আসা পর্যটক সড়কেই যাওয়া আসা করেন। এ পথে উপজেলার দুটি ইকোমিক জোন ও পাঁচ-সাতটি কোম্পানি গড়ে উঠার কারণে এসব কোম্পানীর ভারী যানবাহন চলাচল করার কারনে এমন বেলার দশা।
রাস্তাটি দীর্ঘদিন এমন বেহাল অবস্থার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করার পর স্থানীয় পৌরসভা বলছে রাস্তাটি তাদের নয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের। অপরদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছেন পৌরসভা আমাদের তিনটি রাস্তা ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু এ রাস্তাটি তাদের তত্ত্ববধানে রেখেছে। তাদের রাস্তা আমরা কাজ করতে পারি না।
ট্রাকচালক সোলাইমান মিয়া জানান, এ সড়কে মালামাল নিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের কারণে গাড়ী নষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়।
কনফেকশনারি ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, সড়কের বেহাল দশার কারণে ব্যবসার অবস্থা শোচনীয়। বৃষ্টি হলে রাস্তাটি অনেকটা নদীর মতো মনে হয় আর ভারী ভারী যানবাহন চলাচলের সময় সাগরের ঢেউয়ের মতো সব পানি দোকানের ভেতর চলে আসে। এতে দোকানের মালামালসহ ফার্নিচার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সমাজসেবক সেলিম আহম্মেদ প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এ রাস্তা ব্যবহার করেন। সোনারগাঁয়ের কয়েকটি পর্যটন স্পটগুলো ঘুরতে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েন তারা।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, মহাসড়ক থেকে সোনারগাঁও জাদুঘর যাওয়ার বাইপাস রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করার কারণে বৃষ্টির পানি জমে সড়কটির কয়েকটি স্থানে ১ ফুটের মতো গর্ত হয়ে গেছে। সড়কটি সংস্কারের জন্য আমরা পৌরসভা ও সড়ক ও জনপথকে জানিয়েছি তারা একে অপরের রাস্তা এই দোহাই দিয়ে রাস্তাটিকে অচল অবস্থায় ফেলে রেখেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সোনারগাঁও উপজেলা প্রকৌ আরফুল হক জানান, এ বিষয়ে সড়ক বিভাগকে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বাজেট আসলে শিগগিরই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
সোনারগাঁ পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী ও পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানান, পৌরসভার ফান্ডের অবস্থা খুবই শোচনীয়। তা ছাড়া সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। আমরা চেষ্টা করছি সড়ক ও বিভাগের সাথে সমন্বয় করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়ার। আর সংস্কার করা হবে।