আশিকুজ্জামান, সময়ের চিন্তা ডট কমঃ র্যাব-১১ এর অভিযানে ঢাকার সায়েদাবাদ ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ হতে ৩ ইয়াবা পাচারকারী গ্রেফতার। ৮০০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। বিশেষ করে সংঘবদ্ধ মাদক পাচারকারীদের গ্রেফতার করতঃ মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুব সমাজ তথা দেশকে বাচাঁতে র্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপনসূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৭ নভে¤¦র ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে সকাল ১০০০ ঘঢিকা থেকে বিকাল ১৬০০ ঘটিকা পর্যন্ত র্যাব-১১, সিপিএসসি’র মাদক বিরোধী পৃথক অভিযানে ডিএমপির ঢাকার সায়েদাবাদ ও নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকা হতে ৮০০০ পিস ইয়াবাসহ ৩জন পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো ১। খাইরুল আমিন(২২), ২। ফারজানা আক্তার @সুমি(৩৪) ও ৩। আনোয়ারা(৩৫)।
গোপনসূত্রে জানা যায় কক্সবাজারের একজন ইয়াবা পাচারকারী দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিতভাবে অভিনব কৌশলে বাসযোগে ইয়াবা পাচার করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ নভে¤¦র ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে উক্ত ইয়াবা পাচারকারী একই কৌশলে কক্সবাজার হতে বাসযোগে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল সকাল ১০০০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রাফি ফিলিং স্টেশনের সামনে পাকা রাস্তার উপর চেকপোষ্ট স্থাপন করে। চেকপোষ্টে গাড়ী থামিয়ে তলাসীকালে কক্সবাজার হতে ঢাকাগামী প্রেসিডেন্ট ট্রাভেলস সিপিং কোচ থেকে নেমে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্দিগ্ধ হিসেবে খাইরুল আমিন’কে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খাইরুল আমিন কথা ও আচরণে অসংলগ্নতা ও অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেলেও ইয়াবা পাচারের বিষয়ে সে অস্বীকার করে। অতঃপর নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত খাইরুল আমিন স্বীকার করে যে উক্ত বাসে তার সিটের কেবিনের পাশের গ্লাস সংলগ্ন বাসের ফ্রেমের সাথে সাথে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো চু¤¦ক দ্বারা ইয়াবা ট্যাবলেট আটকানো আছে। অতঃপর তার দেয়া তথ্য মতে অভিযান পরিচালনা করে ডিএমপির সায়েদাবাদ এলাকা হতে উক্ত বাসে তার সিটের কেবিনের বাম পাশের গ্লাস সংলগ্ন বাসের ফ্রেমের সাথে চু¤¦ক দিয়ে আটকানো ও স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ০৩ টি পোটলা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে উক্ত পোটলাগুলো খুললে ৩০টি পলিপ্যাকে রক্ষিত ৬,০০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে খাইরুল আমিন হতে প্রাপ্ত তথ্য মতে ১৫০০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জের দক্ষিন সানারপাড় এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী ফারজানা আক্তার @সুমিকে গ্রেফতার করা হয় ও তার বাসা থেকে ১২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় এবং ১৬০০ ঘটিকার সময় পূর্ব সানারপাড় এলাকায় পৃথক আরেকটি অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী আনোয়ারাকে গ্রেফতার করা হয় ও তার বাসা থেকে ৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সর্বমোট ০৩টি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ৮,০০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় গ্রেফতারকৃত খাইরুল আমিন এর বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এলাকায়। সে দীর্ঘদিন যাবৎ অভিনব কৌশলে কক্সবাজারের টেকনাফ হতে বাসযোগে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় অভিনব পন্থায় নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার ও সরবরাহ করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় ২০১৫ সালে একটি হত্যা মামলা এবং ডিএমপি’র মতিঝিল থানায় ২০১৬ সালে মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে। প্রায় তিন বছর জেলে থাকার পর বছর খানেক পূর্বে জামিনে এসেছে। পৃথক অভিযানে গ্রেফতারকৃত আসামী ফারজানা আক্তার@সুমি’র স্বামী-জাবেদ এর বাড়ি চট্টগ্রাম শহরে। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের নামে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ও মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ফারজানা’র স্বামী প্রায় ৩বছর ধরে উক্ত মামলায় জেল হাজতে আছে। সুমিও উক্ত মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলার পলাতক আসামী। গ্রেফতারকৃত অপর আসামী আনোয়ারা স্বামী-এনামুল হক জিয়া এর বাড়ি কক্সবাজার জেলার। তারাও স্বামী-স্ত্রী উভয়েই চিহ্নিত মাদক পাচারকারী। তাদের নামেও মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আনোয়ারার স্বামী এনামুল হক জিয়া ও বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো স্বীকার করে যে, তারা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসা করে আসছে। তাদের একমাত্র পেশা ছিল মাদক ব্যবসা।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।