মামলাবাজ ও অত্যচারী এক নারীর গ্রেফতার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

253

এস এম আলতাফ হোসাইন সুমন , লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে মামলাবাজ ও অত্যচারী নারী তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্নার গ্রেফতারের দাবিতে নিহত খলিলের মরদেহ নিয়ে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রীরির বাড়ির ফটকে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে গ্রামবাসী। এসময় মহাসড়কে শত শত যানবহন আটকা পড়ে।

মঙ্গলবার(২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে ৩ ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন ও লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে গ্রামবাসী। নিহত দিনমজুর খলিল মিয়া(৩৪) কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কাশিরাম গ্রামের আবদার রহমান মুন্সির ছেলে।

অবরোধকারী গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার  কাশিরাম গ্রামের ফজলু মাষ্টারের মেয়ে স্থানীয় উত্তর বাংলা কলেজের প্রভাষক এস. তাবাসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না ঠুনকো বিষয় নিয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলা ও পুলিশী হয়রানী করে গ্রামবাসীকে জীম্মি করে রেখেছে। তার হয়রানীর প্রতিবাদে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা আমলে না নিয়ে উল্টো তামান্নার মিথ্যা মামলা গ্রহন করে প্রায় অর্ধশত নিরীহ গ্রামবাসীকে হাজতবাস করতে হয়েছে। কালীগঞ্জ ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে সুসম্পর্কের কারনে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানী করে আসছেন তামান্না। এর হয়রানী থেকে মুক্তি পেতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সরকারী বিভিন্ন দফতরে গ্রামবাসী একাধিকবার গণপিটিশন দিয়েও প্রতিকার পায়নি।

তামান্নার দায়ের করা একটি মিথ্যা মামলায় ওই গ্রামের দিনমজুর খলিল মিয়া আদালতে যাওয়ার পথে অটোরিক্সার ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে লালমনিরহাট থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসাধিন থেকে  সোমবার(২৬ অক্টোবর) মারা যান। এ ঘটনায় ফুসে উঠে এলাকাবাসী।

প্রভাষক তামান্নার গ্রেফতার, কালীগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদের প্রত্যহারসহ তামান্নার দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মৃত খলিলের মরদেহ নিয়ে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বাড়ির ফটকের সামনে  মানববন্ধন করে মরদেহ লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে রেখে মহাসড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসী। পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে অবরোধ তুলে নিতে দুই ঘন্টা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভুমি) জাহাঙ্গীর আলম। এতে মহাসড়কের উভয় প্রান্তে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। ভোগান্তিতে পড়ে এ মহাসড়কের যানবাহনে থাকা যাত্রীরা।

এসময় দুই দিনের সফরে আসা সমাজ কল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের গাড়ি বহরও আসতে বিলম্ব হয়। দীর্ঘ যানজট কেটে দুই ঘন্টা পরে মন্ত্রীর গাড়ি বাড়ির সামনে পৌছলে মন্ত্রী তাদের দাবি ভেবে দেখার আশ্বাস্থ করলেও তারা মহাসড়ক ছেড়ে দেয়নি। বরং অসুস্থ মন্ত্রীকে বাড়িতে প্রবেশের সুযোগ দিলেও অবরোধ সচল রাখেন গ্রামবাসী।

অবশেষে দুপুর দেড়টার দিকে অবরোধকারী গ্রামবাসীর কয়েকজনকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন সমাজ কল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। এ সময় গ্রামবাসীর দাবিগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তামান্নার বিরুদ্ধে ইতিপুর্বে দাখিল করা অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় গ্রামবাসী।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য কালীগঞ্জ থানার ওসির সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল ধরেননি।