মোর্শেদা মুন্নি: নারায়নগঞ্জের কাশিপুরে শ্রমিক সন্তোষের সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের কাজে বাধা প্রদান করে ঐ এলাকার সন্ত্রাসী আরিফ ইকবাল। আরিফ কাশিপুর সমাজ উন্নয়ন সংসদের সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের ক্যাডার বলে বহু অপকর্ম করে যাচ্ছে বলে জানায় শ্রমিকরা। করনি গ্রুপের ভাড়াটিয়া গুন্ডা হিসাবে কাজ করে আরিফ ইকবাল।
১৬ মার্চ করনি এ্যাপারেল / করনি গ্রুপ পোষাক কারখানার দূর্নীতির সংবাদ সংগ্রহ কালে স্থানীয় সন্ত্রাসী আরিফ ইকবাল (কাশিপুর সমাজ উন্নয়ন সাংসদ এর সহ সভাপতি) মহিলা সাংবাদিকের গায়ে হাত ও ক্যামেরায় আক্রমণসহ প্রাননাশের হুমকি দেয়। অশুভ ও অভদ্র আচরন করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী সাংবাদিকের অফিসের নির্দেশে ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করা হয়।
তথ্যসুত্রে, করনি এ্যাপারেল / করনি গ্রুপ পোষাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা, ১৬ই মার্চ সকাল ১০ টায় সাংবাদিকের নাম্বারে কল দিয়ে জানায়, গত ৬ মাস যাবত তাদের বেতন ওভারটাইমের কোন টাকাই দেওয়া হচ্ছে না,
টাকা চাইতে গেলে শ্রমিকদের দেই দিচ্ছি বলে ঘুরাচ্ছে ও সময় ক্ষেপন করছে কারখানার কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরা এ বিষয়ে অতিষ্ঠ হয়ে, আন্দলনের পথ বেচে নিয়েছে বলে জানায় আন্দোলনকারী শ্রমিকরা। মালিক পক্ষ পুলিশের গাড়ি নিয়ে শ্রমিক দমনে দাঁড়িয়ে আছে কারখানার সামনে। সেই সংবাদের প্রেক্ষিতে, ঐ স্থানে কিছু সাংবাদিক উপস্থিত হয়ে সংবাদ সংগ্রহ কাজে ব্যস্ত অবস্থায় বাধার সম্মুখীন হয়। শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহ করার সময় শ্রমিকরা জানায়, ” আমরা বেশিরভাগ লোকই অস্থায়ী, প্রায় নব্বই শতাংশ লোকই ভাড়াটিয়া ও নিম্নস্তরের। টাকা চাইতে গেলেই স্থানীয় সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের অত্যাচার করে, যারা প্রতিবাদ করতে যায় তাদের দেখে দেখে চাকুরি চুত্য করে, তাই কেউ মুখ খুলে আবার কেও সহ্য করে।”
এভাবে আর কতোদিন? প্রতি মাসের ইনকামের টাকায় প্রতি মাস তাদের চলতে হয়। ঘড় ভাড়া, দোকান বিল তাদের প্রতি মাসেই পরিষোধ করতে হয়, না করলে তাদের পরবর্তী মাসে চলার মত ক্যাপাসিটি থাকেনা। এক পর্যায়ে তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে তাদের চলার মত কোন শক্তি সামর্থ থাকে না। কান্না চোখে শ্রমিকরা ক্যামেরার সামনে জানায় “কোম্পানির যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে আমাদের ৬ মাসের বেতন ওভারটাইমের টাকার অর্ধেক দেক, আমরা না হয় অন্য কোথাও কাজ খুজে নিব।
আমাদের তো খেয়ে পরে চলতে হবে, আমাদের আর কোন উপায় নেই, আমরা নিরুপায়, এই কথাগুলা যদি আমরা মালিকপক্ষ বা কোম্পানির উপরপদস্ত কর্মকর্তাদের বলতে যাই আমাদের যখন তখন যা তা ভাষায় গালিগালাজ করেন ও হুমকি দেয়, আমরা এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি চাই।”
তথ্য সংগ্রহের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী আরিফ ইকবাল ঘটনা স্থলে এসে শ্রমিকদের বলে, “আজ অফিস ছুটি সোমবারে সবার সাথে কথা হবে” এই কথার ভিডিও ধারণ করতে যাওয়ার সময় সময়ের চিন্তা ডট কম’র সাংবাদিক মোর্শেদা মুন্নীকে সন্ত্রাসী আরিফ ইকবাল বলে, “আপনি আমার ভিডিও করছেন কেন? আমি পাবলিক,আপনি আমার ভিডিও করতে পারেন না।” তার প্রশ্নের জবাবে প্রতিবেদক বলে, আপনি পাবলিক হলে কেন এসে শ্রমিকদের বলছেন অফিস ছুটি? তখন আরিফ প্রতিবেদকের উপরে চড়াও হয়ে বলে, “আমার নাম আরিফ ইকবাল, আমি চাইলে আপনারা এখানে থাকতে পারবেন না, এইটুকুই বললাম, একদম রেখে দিব।” কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ের করনি গ্রুপের অফিসের কর্মকর্তারা আরিফকে সে স্থান থেকে নিয়ে যায়। এই ঘটনার সময় প্রশাসনের নীরব ভূমিকাই প্রমান করে যে সন্ত্রাসী আরিফের সাথে প্রশাসনের সখ্যতা।
ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল ফতুল্লার শিল্প পুলিশের এ এস আই মনির ও এস আই নাদিম। সাংবাদিকদের অপদস্তের ঘটনায় পুলিশগন বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করে এবং কোনো রকম আইনত ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে ফতুল্লা থানার ওসি নুরে আজমকে কল করলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয় কিন্তু ১ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তাই ফতুল্লা থানার দারস্থ হয়ে ভুক্তভোগী মহিলা সাংবাদিক সন্ত্রসী আরিফের নামে অভিযোগ করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এস আই সন্জয় মালো ঘটনা স্থলে গিয়ে সন্ত্রাসী আরিফকে কল করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পায়।
এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত আরিফের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থার খবর পাওয়া যায়নি।