মাদকাসক্ত স্বামীকে তালাক দেয়ার পরেও নির্যাতন থেকে রক্ষা পেল না আফরোজা আক্তার

573

সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃসোনারগাঁ পৌরসভার ছোট শীলমান্দী কান্দ গ্রামের মতিউর রহমানের মেয়ে আফরোজা আক্তার মুক্তি। ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ তার বিয়ে হয় ফতুল্লা থানাধীন উত্তর হাজীগঞ্জের আদর্শ কলোনী বাস্তুহারা এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিনের সাথে। বিয়ের পর বেশি দিন সুখে কাটেনি আফরোজা আক্তার মুক্তির সংসার জীবন। ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে থাকে যৌতুক লোভী স্বামী আলাউদ্দিনের মাদকাসক্তি সহ নানা অপকর্মের ইতিহাস। এসময় প্রতিবাদ করায় তার উপর নেমে আসে নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার।

মাদক সেবনের জন্য পিত্রালয় থেকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে আফরোজার উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে স্বামী আলাউদ্দিন। এরই মধ্যে তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে। কিন্তু মাদকের নেশায় সংসারের প্রতি উদাসীন আলাউদ্দিন ঠিকমত তাদের ভরপোষণ না করায় আফরোজা তার মেয়েকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের ছোট শীলমান্দী কান্দ গ্রামে নিজ পিত্রালয়ে চলে আসে। এরপর সে নোটারী পাবলিক আদালত ও ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৭ (১) ধারামতে কাজী অফিসে স্বামী আলাউদ্দিনকে তালাক প্রদান করে।

কিন্তু তালাকের পর থেকে আলাউদ্দিন এবং তার দুই ভাই মাদকের ডিলার সালাউদ্দিন ও রনি আফরোজাকে নানা ধরণের হুমকি ধমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আসছে। এছাড়া রাস্তাঘাটে তাকে উত্যক্ত করার পাশাপাশি তার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দেয়াসহ তাকে ও তার আত্মীয়স্বজনদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার হুমকি দিয়ে আসছে। এ ঘটনায় অসহায় নারী আফরোজা আক্তার মুক্তি ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। যার নম্বর ১৩০৬/১৮।

আফরোজা আক্তার মুক্তি জানান, একটুখানি সুখের আশায় আলাউদ্দিনের সাথে ঘর বেঁধেছিলাম। কিন্তু মাদকের নেশা তার মানুষত্বকে কেড়ে নিয়েছে। স্ত্রী হিসেবে অন্য, বস্ত্র ও চিকিৎসার অধিকার থেকেও সে আমাকে বঞ্চিত করেছে। নাবালক সন্তানের ভরনপোষনও তার কাছ থেকে পাইনি। তাই স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে ও অন্যের প্ররোচনা ছাড়াই আমি তাকে তালাক দিয়েছি। কিন্তু তালাকের পরে সে আমাকে ও আমার আত্মীয়স্বজনদের গালিগালাজ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার হুমকি দিচ্ছে। আমার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখাচ্ছে। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পীকার একজন নারী, সেদেশে নারীদের উপর এভাবে নির্যাতন মেনে নেয়া যায় না।

আলাউদ্দিন ও তার ভাইয়েরা এসব বন্ধ না করলে আমি তাদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার কাছে অভিযোগ করবো এবং প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাহেবের কাছেও যাব।