সোনারগাঁয়ে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

707

স্টাফ রিপোর্টার ঃনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঝিলের পানিতে বর্ষবরণ উৎসব উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য জাদুঘর উন্মুক্ত রাখা হয়। দিনব্যাপী পুতুল নাচ, নাগর দোলা, নৌকা দোলা, বায়স্কোপ, গ্রামীণ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে ঝিলের পানিতে স্থাপিত ময়ূরপক্সখী নৌকা মঞ্চে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ। বর্ষবরণ উৎসব উপলক্ষে ফাউন্ডেশনে তিনদিন ব্যাপী বৈশাখী মেলা বসেছে। মেলায় দোকানীরা তাদের বিভিন্ন পন্যের পসরা নিয়ে বসেছেন। মেলায় গ্রাম বাংলার কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে রাজশাহীর শখের হাঁড়িশিল্পী সুশান্ত পাল, সঞ্জয়পাল, মৃত্যুঞ্জয় পাল, পটচিত্র শিল্পে রতন পাল, কনিকা পাল; সোনারগাঁয়ের দারুশিল্পে বীরেন্দ্র সূত্রধর, দিপালী রানী সূত্রধর, আশুতোষ সূত্রধর, সন্ধ্যা রানী সূত্রধর, বাঁশ-বেত কারুশিল্পে শ্রী পরেশ চন্দ্র দাস, রাজকুমার দাস, নকশি কাঁথায় আলেয়া আক্তার, লাকী ইমরান, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা কারুশিল্পে মনোয়ারা বেগম, আরিফা খাতুন, মাগুরার শোলাশিল্পে শ্রী শংকর মালাকার, রামপ্রসাদ মালাকার এবং মাসব্যাপী কারুশিল্পী প্রশিক্ষণে নকশি কাঁথা কারুশিল্পে হোসনে আরা বেগম, পাটজাত কারুশিল্পে কাইফু, মোর্শেদা আক্তার ও নকশি হাতপাখা কারুশিল্পের প্রশিক্ষক এবং প্রশিক্ষণার্থীগণ অংশগ্রহণ করেন।
কবি আফরোজা কণার সঞ্চালনায় নৃত্যানুষ্ঠান, রবীন্দ্র গোপ রচিত বর্ষবরণ গান, বাউল গান, লালন, হাছন রাজা, শাহ আব্দুল করিমের গান এবং জারি-সারিগানের সুরের মূর্ছনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বৈকালিক আয়োজনে বর্ষবরণ উপলক্ষে ফাউন্ডেশনের লোকমঞ্চে লালন পাঠশালার ছোট সোনামণিদের নাচ-গান- কবিতা আবৃত্তি ও বাউল গানের আসর বসে।
এতে লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ¯িœগ্ধা, রীতা, আনিসা, রুমা গোপ, পান্না খানম, ছোট খালেক দেওয়ান, আইনাল হক বাউল ও তার দল, ¯^র্ণা, সীমা, প্রাপ্তি, কাকলি সরকার প্রমুখ। এসময় হাজার হাজার দর্শক বর্ষবরণের অনুষ্ঠানমালা উপভোগ করেন।
এছাড়াও সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভট্টপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বটতলায় বিভিন্ন আয়োজনে পালিত হয় বর্ষবরণ। প্রশাসনের উদ্যোগে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার নেতৃত্বে ইউএনও অঞ্জন কুমার সরকারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনসাধারণ অংশ নেন।
অপরদিকে বাংলার তাজমহল, জয়রামপুরের বউমেলা, মঙ্গলেরগাঁওয়ের বৈশাখী মেলাসহ প্রায় অর্ধশত স্পটকে সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। পসরা সাজিয়ে বসেছিল হস্ত কারুশিল্প দোকানিসহ বিভিন্ন গ্রামীন খাবার খই, চিরা, মুড়ি, বাতাশা, জিলেপী, মিষ্টি, সন্দেশ, চটপটি, পিঠাসহ বাহারী খাবারের সমারোহ নিয়ে অসংখ্য দোকানীরা।