প্রতারক চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার

262

জান্নাতুল নাঈম সুরাইয়াঃ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ০৮ মে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে র‌্যাব-১১, সিপিএসসি এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা হতে বহুরূপী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৪ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো ১।মোঃ এসহাক আলী (৭০), ২।মোঃ মামুন (৪৯) ৩।খন্দকার মোঃ রাজু আহমেদ @ মাসুদ (৫৬) ও ৪।মোঃ ফারুক কবির (৩৫)।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যবসায়ী শ্রেণীর লোকজনদের টার্গেট করে বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে কখনও ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেওয়া, কখনো ডিলারশীপ পাইয়ে দেওয়া কখনোবা এজেন্ট নিয়োগের কথা বলে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় তাদের ভাড়াকৃত সুসজ্জিত অফিসে ডেকে নিয়ে আসে এবং জামানত/বিনিয়োগ বাবদ প্রতারণামূলকভাবে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে। প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন কৌশলে এই সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সদস্যরা তাদের পাতানো প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সহজ সরল ব্যবসায়ীদের নিঃস্ব ও সর্বস্বান্ত করে আসছে। তাদের প্রতারণায় ভূক্ত হওয়া কিছু ভ‚ক্তভোগীর অভিযোগের সার-সংক্ষেপঃ

*১ম অভিযোগ- টিউবওয়েল স্থাপনের ঠিকাদার নিয়োগের নামে প্রতারণা*

মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে এবং পেশায় একজন শিক্ষক। একটি বেসরকারী কলেজে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি গভীর ও অগভীর আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল বসানোর ঠিকাদারী কাজ করতেন। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে সংঘবদ্ধ এই প্রতারক চক্রের কিছু সদস্য মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর সাথে দেখা করে সৌদি সংস্থা কর্তৃক কুমিল্লা জেলার লাকসাম, লালমাই ও মনোহরগঞ্জ থানা এলাকায় কয়েক শত টিউবওয়েল স্থাপনের ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সুসজ্জিত অফিসে ডেকে নিয়ে ৩০ লক্ষ জামানত দেওয়া হলে উক্ত কাজের ঠিকাদারী পাইয়ে দেবে বলে প্ররোচিত করে। বিভিন্ন ছল চাতুরী ও কলা কৌশল করে অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে টিউবওয়েল স্থাপনের ঠিকাদারী কাজের জামানত বাবদ প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করে এবং সু-কৌশলে আত্মগোপন করে। ভুক্তভোগী মোঃ আবুল কালাম আজাদ প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ফতুল্লা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন যার নম্বর-৩০, তারিখ- ০১/০১/২০২০ ইং এবং র‍্যাব-১১ এর কার্যালয়ে অভিযোগ করেন।

*২য় অভিযোগ- দরজা ও চৌকাঠ নেয়ার নামে প্রতারণা*

মোঃ আল আমিন, বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানায় এবং পেশায় একজন কাঠ ব্যবসায়ী। গত মার্চ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজেদেরকে রিয়েল এষ্টেট কোম্পানীর মালিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাদের নির্মাণাধীন কয়েকটি বহুতল ভবনে প্রায় ২২০টি কাঠের দরজা ও  দরজার ফ্রেম লাগানোর লোভনীয় প্রলোভন নিয়ে মোঃ আল আমিন এর সাথে দেখা করে। উক্ত কাঠ ব্যবসায়ীকে তাদের সুসজ্জিত অফিসে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন ছল চাতুরী ও কলা কৌশল করে প্রায় ১১ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারক চক্রটি তাদের অফিস পরিবর্তন করে কৌশলে গা ঢাকা দেয়। ভুক্তভোগী মোঃ আল আমিন প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে র‍্যাব-১১ এর কার্যালয়ে উক্ত প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ করেন।