নুর আলম ও মোক্তার হোসেনঃ হাটের টেন্ডার জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চত্বরে গতকাল বুধবার ১৬ ফেব্রুয়ারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে দুপক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নুর নির্দেশে এই হামলা করা হয়েছে বকে জানা যায়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ঘটনাস্থলে ও উপজেলার আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১৩টি স্থায়ী হাটের জমা দেওয়ার দিন ছিল বুধবার। পরে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ঐতিহ্যবাহী কাইকারটেক হাটটি ইজারা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর সমর্থক রোমান বাদশা হাট পরিচালনা করে আসছিল।
বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি সোহাগ রনির সমর্থক সজল মিয়া তার লোকজন ঐ হাটের দরপত্র জমা দিলে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নান্নুরপন্থি ও মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি সজিব, যুবলীগ কর্মী সাগর, হৃদয়, অনিক, পলাশ, পায়েল সহ ২০/২৫ জনের একদল যুবলীগের নেতাকর্মীরা রফিকুল ইসলাম নান্নুর নির্দেশে বাধা প্রদান করে।
এতে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয় এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সোহাগ রনির সমর্থক শেখ মেহেদী হাসান, সজল মিয়া, জাবেদ মিয়া, পারভেজ মিয়া, রানা, মিরাজ হোসেন, আব্দুল আলী ও বাবুসহ ১২ জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নুর নির্দেশ তার সন্ত্রাসী ক্যাডার সজিব, ওমর ফারুক ও তার ক্যাডার বাহিনী।
সংঘর্ষে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর পক্ষের ফারুক প্রধান, রবিউল প্রধানসহ ৩ জন আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, গুরুতর আহতদের মধ্যে সোহাগ রনির সমর্থক শেখ মেহেদী হাসান, জাবেদ, সজলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোহাগ রনি জানিয়েছেন, ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন জাবেদ ও সজলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার সময় আমি ব্যবসায়িক কাজে নারায়ণগঞ্জ ছিলাম আর নান্নু উপজেলা চত্বরে থেকে হামলার নির্দেশ দিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপজেলা পরিষদ থেকে বের করে দেন এবং উপজেলা চত্বর ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সেলিম মিয়া জানান, যুবলীগের সমর্থকরা দীর্ঘ দিন ধরে হাটটি পরিচালনা করে আসছিল। আমরা এ বছর টেন্ডার জমা দিতে গেলে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসী রফিকুল ইসলাম নান্নুর নির্দেশে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করে আমাদের লোকদের।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ সন্ত্রাসী ধারায় মামলা রুজু করার জন্য সোনারগাঁ থানা পুলিশকে আহবান জানান।সোনারগাঁ থানা পুলিশ অনৈতিক সুবিধা পেয়ে প্রকৃত ঘটনা ধামা চাপা দিতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। তাই মামলা রুজুতে নারায়নগঞ্জের এসপি জায়েদুল আলমের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ।